Advertisement
০৪ মে ২০২৪

পুলিশকে ফের হেনস্থা, ধৃত চার

গাড়িচালক মত্ত অবস্থায় রয়েছেন কি না, তা পরীক্ষা করতে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁরা দু’টি গাড়ি থামান। অভিযোগ, দু’ক্ষেত্রেই চালক প্রথমে নামতে অস্বীকার করেন। সার্জেন্ট বোঝালেও গাড়িচালক ও আরোহীরা তর্ক জুড়ে দেন।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০১:৩১
Share: Save:

কখনও ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গকারী মোটরবাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে মার খাচ্ছে পুলিশ। কখনও হেলমেট না পরায় চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। কখনও আবার দুষ্কৃতীদের লড়াই থামাতে গিয়ে প্রহৃত হচ্ছে পুলিশ। কর্তব্যরত অবস্থায় কলকাতা পুলিশের কর্মীদের উপরে আক্রমণের ঘটনা চলছেই।

তেমনই একটি ঘটনা ঘটল রবিবার রাতে। পুলিশ জানায়, তপসিয়া থানার গোবিন্দ খটিক রোড ও পি সি কানেক্টরের মোড়ে ডিউটি করছিলেন ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ড ও পার্ক সার্কাস ট্র্যাফিক গার্ডের দুই সার্জেন্ট। গাড়িচালক মত্ত অবস্থায় রয়েছেন কি না, তা পরীক্ষা করতে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁরা দু’টি গাড়ি থামান। অভিযোগ, দু’ক্ষেত্রেই চালক প্রথমে নামতে অস্বীকার করেন। সার্জেন্ট বোঝালেও গাড়িচালক ও আরোহীরা তর্ক জুড়ে দেন। পুলিশের অভিযোগ, গাড়ি থেকে নামার পরে দু’টি গাড়ির চালককে ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, দু’জনেই মত্ত অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের তপসিয়া থানায় যেতে বললে চালকেরা অস্বীকার করেন। দু’টি গাড়িতেই আরও এক জন করে আরোহী ছিলেন। প্রত্যেকেই মত্ত অবস্থা ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। অভিযোগ, প্রথমে বচসা হলেও কিছু পরেই দু’টি গাড়ির চালক ও আরোহী পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। পুলিশকর্মীদের মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে তপসিয়া থানায় খবর গেলে অতিরিক্ত ওসি-র নেতৃত্বে বাহিনী আসে। মোট চার জনকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম অমরলাল মেটা, বিকাশ ভাল্লা, দেবাশিস ধর এবং শুভজিৎ মুখোপাধ্যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁদের বাড়ি কড়েয়া, মুচিপাড়া ও চারু মার্কেট থানা এলাকায়।

মাঝেমধ্যেই কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের উপরে নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। আইনভঙ্গকারীদের বেপরোয়া মনোভাবের পাশাপাশি, সাধারণ জনমানসে পুলিশের ভাবমূর্তির উপরেও যে এর প্রভাব পড়ছে, তা স্বীকার করলেন কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ। এ প্রসঙ্গে পল্লববাবুর পর্যবেক্ষণ, ‘‘এখন বেশির ভাগ মানুষের আইন না মানার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। পুলিশের উপরে সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ বেশি করে নিতে হবে।’’ সমাজতত্ত্ববিদ অভিজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘পুলিশ মার খেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অভিযুক্তেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। পুলিশ এখন দলদাসে পরিণত হয়েছে।’’ কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে সাধারণ মানুষের আস্থা কমেছে। ইদানীং দুষ্কৃতীরা ভাবছে, পুলিশের গায়ে হাত দিলে রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে তারা ছাড় পেয়ে যাবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশের শীর্ষ স্তরের আধিকারিকদের কঠোর হতে হবে। পুলিশের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস যাতে কেউ না পায়, তার ব্যবস্থা করে নিচুতলার কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Kolkata Police Arrest Harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE