Advertisement
০৭ মে ২০২৪

২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে দ্বারস্থ হাইকোর্টে

যোধপুর পার্কের বাসিন্দা, বছর বত্রিশের ওই মহিলা গৃহবধূ। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ওই মহিলা আদালতের কাছে আবেদনে জানিয়েছেন যে, তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণটি সুস্থ নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪২
Share: Save:

গর্ভপাত করানোর অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন ২৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলা। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর আদালতে এই আবেদন শুনানির জন্য ওঠে। মহিলার এই আবেদন সম্পর্কে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য আজ, শুক্রবার হাইকোর্টকে জানানোর জন্য অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আবেদনকারী মহিলা ও তাঁর স্বামীকেও আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি চক্রবর্তী।

যোধপুর পার্কের বাসিন্দা, বছর বত্রিশের ওই মহিলা গৃহবধূ। তাঁর স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ওই মহিলা আদালতের কাছে আবেদনে জানিয়েছেন যে, তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণটি সুস্থ নয়। ভ্রূণ পরীক্ষা করে একাধিক চিকিৎসক তাঁকে জানিয়েছেন, গর্ভস্থ সন্তানের মস্তিষ্ক পরিণত হয়নি। তাতে একাধিক ত্রুটি রয়েছে। ইতিমধ্যে মস্তিষ্কে জল জমতেও শুরু করেছে। ফলে জন্মের পরে তার মধ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা দেখা যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন অনেক চিকিৎসক। এমনকি, সেই সন্তান মারা যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন অনেকেই। তাই গর্ভপাত করাতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা।

প্রসঙ্গত, মাত্র ১৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গর্ভপাত করানোর অনুমতি না পেয়ে আয়ার্ল্যান্ডের হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল দক্ষিণ ভারতীয় মহিলা কবিতা হলপ্পানাভারের (২০১২ সাল)। তার পরে সে দেশে শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। চাপে পড়ে অবশেষে গর্ভপাত নিয়ে নতুন আইন তৈরি করতে বাধ্য হয়েছিল আয়ার্ল্যান্ড প্রশাসন। তবে এ দেশে পরিস্থিতি বিচার করে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়ার আইন রয়েছে আগে থেকেই। ১৯৭১ সালের গর্ভপাত আইন অনুযায়ী, গর্ভধারণের ২১ সপ্তাহের মধ্যে জটিলতা দেখা দিলে কোনও অন্তঃসত্ত্বা গর্ভপাত করাতে পারেন। কিন্তু ওই সময়সীমার পরে গর্ভপাত করাতে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ২৬ সপ্তাহের এক অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ নয়, এই কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কলকাতার ওই মহিলা।

আরও পড়ুন: যৌনপল্লির অন্ধকার থেকে ক্যানিংয়ের নাবালিকাকে ফেরাল ফোন!

এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনকারী মহিলার আইনজীবী অমিতাভ ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল এই নিয়ে দ্বিতীয় বার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। আগের বার তাঁর গর্ভস্থ সন্তান কোনও ভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এ বার গর্ভস্থ সন্তান যাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠে, তার জন্য বহু চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন তাঁর মক্কেল। কিন্তু সকলেই গর্ভপাতের পক্ষেই মত দিয়েছেন। এ দিন এই আবেদনের শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে জানিয়েছেন, ভ্রূণের যেমন বাঁচার অধিকার রয়েছে, তেমনই গর্ভস্থ সন্তান অসুস্থ হলে গর্ভপাত করানোর মৌলিক অধিকার রয়েছে মায়েরও।

এ দিনের শুনানিতে হাজির ছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল-ও। কাউন্সিলের আইনজীবী শৈবালেন্দু ভৌমিক জানান, এর আগে যৌন হেনস্থার শিকার এক তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিল হাইকোর্ট। তাই কোন পরিস্থিতিতে গর্ভপাতের অনুমতি দিতে হবে, সেই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Pregnant Woman Abortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE