E-Paper

রূপান্তরকামী নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমোঘ্ন ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। তাঁর মা-বাবা শিলিগুড়ির বাসিন্দা। এ দিন সকালে পরিচারিকা কাজে গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা বাইরে থেকে খোলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ০৮:৩৫

—প্রতীকী চিত্র।

এক রূপান্তরকামী নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর নাম তমোঘ্ন সেন (২৭)। তিনি সমাজমাধ্যমে নিজেকে তমোঘ্ন তপসিদ্ধা পরিচয়ে লিখতেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে, রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় চকদহ গভর্নমেন্ট কলোনির আমবাগান পূর্ব পুঁটিয়ারিতে। সেখানেই একটি ফ্ল্যাটের তেতলায় তমোঘ্ন থাকতেন। এ দিন সকালে তাঁকে তাঁর বিছানার পাশে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, হৃদ‌্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তমোঘ্নের মৃত্যু হয়েছে। তবে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমোঘ্ন ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। তাঁর মা-বাবা শিলিগুড়ির বাসিন্দা। এ দিন সকালে পরিচারিকা কাজে গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা বাইরে থেকে খোলা। ওই পরিচারিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, তমোঘ্নের ফ্ল্যাটের দরজা প্রায়ই খোলা থাকত বলে তাঁর অস্বাভাবিক কিছু লাগেনি। ঘরে ঢুকে তিনি দেখেন, শোয়ার ঘরের মাটিতে তমোঘ্ন পড়ে রয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পুলিশ জানিয়েছে, তমোঘ্ন যেখানে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন, তার পাশেই ভাঙা কাচের গ্লাস পড়েছিল। তমোঘ্নের শরীরে পুরনো কিছু কাটা চিহ্নও রয়েছে।

তমোঘ্নের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। মানসিক ভাবেও পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না। মাদাকসক্ত হয়ে কাচের বোতল, গ্লাস, জানলার কাচ ভাঙার অভ্যাস ছিল তাঁর। ফলে, তাঁর হাতে ও পায়ে ক্ষতচিহ্ন ছিল। তমোঘ্নের পরিবারের ঘনিষ্ঠ রিনা সিংহরায় বলেন, ‘‘ওঁদের পরিবারকে চিনি। সন্তানের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি তমোঘ্নের মা-বাবা। তমোঘ্ন পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল।’’

রূপান্তরকামী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রঞ্জিতা সিংহ বলেন, ‘‘তমোঘ্ন খুবই গুণী ছিলেন। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কাজ করেছেন। নাচ, গান ও বাচিক শিল্পী হিসাবেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। আমাদের সমাজে রূপান্তরকামী বেশির ভাগ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের একটা সমস্যা থাকেই। পরিবার বা সমাজের থেকে উপেক্ষিত থেকে যান অনেকে। ফলে অনেকের মানসিক বিপর্যয় ঘটে। তমোঘ্নের মধ্যেও হয়তো মানসিক বিপর্যয় ছিল।’’

রঞ্জিতার মতে, অন্যান্য রাজ্যে রূপান্তরকামী মানুষদের আন্দোলন ও দাবি নিয়ে অনেক কাজ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটা বোর্ড তৈরি করেছে ঠিকই। কিন্তু তার কার্যকারিতা কতটুকু? তমোঘ্নের মতো গুণী মানুষেরা হারিয়ে যাচ্ছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death Transgender Mysterious death

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy