Advertisement
১০ মে ২০২৪
দুই নিগমের ভোট

ফের তর্কযুদ্ধের ডাক অভিষেকের

বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনে সিন্ডিকেট বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে যে শাসক দল অস্বস্তি এড়াতে পারছে না, তা স্পষ্ট তৃণমূলের যুব দলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা। পাশে সব্যসাচী দত্ত।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা। পাশে সব্যসাচী দত্ত।

কাজল গুপ্ত ও প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:১০
Share: Save:

বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনে সিন্ডিকেট বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে যে শাসক দল অস্বস্তি এড়াতে পারছে না, তা স্পষ্ট তৃণমূলের যুব দলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও। শনিবার রাজারহাটে প্রচারে এই দুই বিষয়েই তৃণমূলকে বিঁধেছিলেন কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবার ভোটের আগে শেষ ছুটির দিনে রাজারহাটেই তার জবাব দিলেন অভিষেক।

শনিবার সিন্ডিকেট নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাহুল সিংহ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও বিঁধেছিলেন অধীর। এ দিন উত্তরে অভিষেক বলেন, ‘‘আমাদের একটাই দল। একটাই সিন্ডিকেট। একটাই গোষ্ঠী। তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস। তার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুলবাবু, অধীরবাবুরা কেন এক টেবিলে বসে আমাদের সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন না? ওঁরা শুধু সংবাদমাধ্যমে ওই সব বলছেন।’’ দু’দিন আগেই একটি চ্যানেলে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে প্রকাশ্যে বিতর্কের আহ্বান জানান অভিষেক।


রাজারহাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার উদ্দেশে সিন্ডিকেট কর্মীদের বাইক-মিছিল। রবিবার।

সদ্য ভেঙে দেওয়া সিপিএম পরিচালিত রাজারহাট পুরসভার চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায় এখন সেখানকার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁর দলবদল সম্পর্কে অভিষেক বলেন, ‘‘তাপসবাবু ভাল মানুষ বলেই নিজের ভুল বুঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিয়েছেন।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবুর প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘উনি বৃষ্টি হলে দায় চাপান আমাদের দলনেত্রীর উপরে। খরা হলেও দায় চাপান তাঁর উপরেই।’’

এ দিন নিউ টাউন বিধানসভা এলাকায় বিধাননগর পুর-নিগমের ১ থেকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীদের প্রচারে আসেন অভিষেক। রাজারহাটের দশদ্রোণ থেকে মণিখোলা পর্যন্ত মিছিলে হুডখোলা জিপে অভিষেকের সঙ্গে ওঠেন নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তিনি নিজে সল্টলেকের দিকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। অন্য দিকে, অভিষেকের হাত ধরেই তৃণমূলে যাঁর প্রবেশ বলে খবর, সেই তাপসবাবুকে ৪ নম্বরের প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি মণ্ডলের (ডাম্পি) সঙ্গে এক গাড়িতে তোলা হয়। যাঁদের মধ্যে আদায়-কাঁচকলা সম্পর্ক বলেই এলাকার দাবি। নিজের পুরনো ‘গড়’ বাবলাতলা, লালকুঠি, নারায়ণপুর, মণিখোলা হয়ে যাওয়ার সময়ে সাধারণ প্রার্থীর মতোই হুডখোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাপসবাবুকে।

তৃণমূলের অবশ্য ব্যাখ্যা, সব্যসাচীবাবু প্রার্থী হলেও তিনি নিউ টাউনের স্থানীয় বিধায়ক। আর পদযাত্রা হয়েছে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে থাকা পাঁচটি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের নিয়ে। পুলিশের হিসেবে, আনুমানিক চার হাজার মানুষ যোগ দেন তাতে। রাতে নারায়ণপুরে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও হাতিয়াড়াতে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তৃণমূলের প্রচারে যোগ দেন।

পাল্টা বামপ্রার্থী রমলা চক্রবর্তীর সমর্থনে সল্টলেকে মিছিল করেন এসএফআইয়ের কর্মী-সমর্থকেরা। পরে পথসভায় সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণতন্ত্রকে বাঁচাতে পথে নামবেন বিধাননগরবাসী। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে এলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’’

ভোটের আগে বহিরাগতদের দাপট এবং সন্ত্রাসের প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সল্টলেকে সদ্যগঠিত সিটিজেন্স ফোরাম। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুর-নির্বাচনে শান্তি বজায় রাখতে মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আবেদন জানান তাঁরা। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেন, ভোটারেরা ভোট দিতে না পারলে তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হবেন।

অন্য দিকে, এ দিন অবাঙালিদের নিয়ে বামেদের একটি বৈঠকে ছিলেন অসীম দাশগুপ্ত। আগে এমন বৈঠক করেছেন তৃণমূলের সব্যসাচী দত্তও।

ছবি: শৌভিক দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE