E-Paper

পোস্তার রাজবাড়ির হিরের আংটি চুরি! সাজা পেয়েও জামিন অভিযুক্তের

হিরের আংটি চুরির অভিযোগে ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে এক বার বেকসুর খালাস হয়েছিল অভিযুক্ত। হাই কোর্ট ঘুরে ফের ব্যাঙ্কশাল আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পেল সে। পেয়ে গেল জামিনও!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৮
Posta Rajbari

পোস্তা রাজবাড়ির হিরের আংটি চুরির অভিযোগে অভিযুক্তের জামিন। ফাইল চিত্র।

বাদশাহী আংটির জট খুলে ফেলেছিলেন ফেলুদা। কিন্তু হিরের আংটির রহস্যভেদ করতে তাঁকেও হয়তো বেগ পেতে হত। আবার যে সে হিরের আংটি নয়, একেবারে নিজামদের আমলের হিরের আংটি।

এই হিরের আংটি চুরির অভিযোগে ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে এক বার বেকসুর খালাস হয়েছিল অভিযুক্ত। হাই কোর্ট ঘুরে ফের ব্যাঙ্কশাল আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পেল সে। পেয়ে গেল জামিনও!

পোস্তা রাজবাড়ির হিরের আংটি চুরির অভিযোগে বুধবার ওই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করলেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের ৬ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক শ্রীপর্ণা রাউত। ওই ব্যক্তির নাম ইন্দ্রজিৎ তফাদার। তাকে এ দিন দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছ’মাসের কারাদণ্ড।

ঘটনাটি ২০০২ সালের। পোস্তা রাজবাড়ির সদস্য প্রণব রায়ের কাছে ছিল ওই হিরের আংটি। সেটির বাজারদর জানার জন্য ভ্যালুয়ার ডেকেছিলেন প্রণব। সেই কাজের জন্য আসে ইন্দ্রজিৎ তফাদার এবং আর এক ব্যক্তি। তারা জানায়, ওই হিরের আংটির বাজারমূল্য প্রায় আড়াইকোটি টাকা।

আদালত সূত্রের খবর, এর পরেই ওই দু’জন প্রণবকে একটি খেলনা পিস্তল দেখিয়ে আংটিটি নিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে পোস্তা থানার পুলিশ যাদবপুরের বিক্রমগড় থেকে ইন্দ্রজিৎকে গ্রেফতার করে। হিরের আংটিটি মেলে তার বাড়ির সুইচ বোর্ডের মধ্যে। প্রণবের আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাস জানান, নিজামদের আমলে গোলকুন্ডা দুর্গে হিরে-সোনার বাজার বসত। আংটিটি সেখান থেকেই প্রণবের পরিবারে আসে। এই ঘটনায় আর এক অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু টিআই প্যারেডে তাঁকে শনাক্ত করতে পারেননি প্রণব।

এই মামলায় ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল ব্যাঙ্কশালের ৬ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে বেকসুর খালাস পায় ইন্দ্রজিৎ। কৃষ্ণচন্দ্র বলেন, ‘‘এর পরে আদালতে ওই আংটি নিজের বলে দাবি করে ইন্দ্রজিৎ। এ দিকে, তার বেকসুর খালাস পাওয়ার রায়ের বিরুদ্ধে নগর দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন প্রণব। আদালত ব্যাঙ্কশালের ৬ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে মামলার পুনর্বিচারের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান ইন্দ্রজিৎ। হাই কোর্টও নগর দায়রা আদালতের নির্দেশ বহাল রাখে।’’

এর পরে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পায় ইন্দ্রজিৎ। তবে, যে হেতু তার তিন বছরের কম কারাদণ্ড হয়েছে, তাই এ দিন আদালত থেকেই জামিন পেয়ে গিয়েছে ইন্দ্রজিৎ। তবে তার আইনজীবী শবনম দে বলেন, ‘‘এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা নগর দায়রা আদালতে যাব। ইন্দ্রজিৎ এক জন হিরের ব্যবসায়ী। আগেও তিনি এই মামলায় বেকসুর খালাস হয়েছেন। প্রণবই আমার মক্কেলকে ফাঁসিয়েছেন।’’

কিন্তু সেই হিরের আংটি এখন কোথায়? কৃষ্ণচন্দ্র বলেন, ‘‘সেই হিরের আংটি এখন প্রণবের কাছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Posta Crime

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy