Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বিমানের আসনের ফাঁকে সোনা, পাচারের নয়া পন্থা

পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতা বিমানবন্দরে সোনা পাচার হয় মূলত ব্যাঙ্কক থেকেই। খুব কম বাংলাদেশ বা দুবাই থেকে বিমানে সোনা পাচার হয়ে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০৯:০০
Share: Save:

সোনা পাচারের এ এক অভিনব পন্থা!

বিমানের একটি নির্দিষ্ট আসনের ফাঁকে গুঁজে দেওয়া হচ্ছে সোনা। সাধারণ চোখে তা পড়ার কথা নয়। এমনকী, যাত্রীরা নেমে গেলে যাঁরা বিমান পরিষ্কার করার কাজ করেন, না জানলে তাঁদের পক্ষেও বোঝা সম্ভব নয়।

যেখানে যাত্রীরা বসেন, আর যেখানে ঠেস দেন —দুইয়ের ফাঁকে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া এমন চোরাই সোনার হদিস পেয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতর। বুধবার ব্যাঙ্কক থেকে স্পাইসজেটের বিমান কলকাতায় নামার পরে তল্লাশি চালান শুল্ক অফিসারেরা। তখনই ১৮এফ আসনের ফাঁক থেকে ৪টি সোনার বার পাওয়া যায়। ৫৭৯ গ্রাম সেই সোনার দাম ১৬ লক্ষ টাকারও বেশি। দিন তিনেক আগে ব্যাঙ্কক থেকে আসা ওই স্পাইসজেটের বিমানেরই অন্য একটি আসনের তলা থেকে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার সোনা পেয়েছিলেন অফিসারেরা।

পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতা বিমানবন্দরে সোনা পাচার হয় মূলত ব্যাঙ্কক থেকেই। খুব কম বাংলাদেশ বা দুবাই থেকে বিমানে সোনা পাচার হয়ে এসেছে। তাই, শুল্ক অফিসারদের প্রধান নজর থাকে ব্যাঙ্কক থেকে আসা যাত্রীদের দিকেই। ইদানীং তল্লাশি চালানো হচ্ছে বিমানেও। ব্যাঙ্কক থেকে এখন দু’টি আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা — তাই ও এয়ার এশিয়া কলকাতায় উড়ান চালায়। এ ছাড়া দেশের দু’টি বিমানসংস্থা — ইন্ডিগো ও স্পাইসজেটও ওই রুটে উড়ান চালায়। তাই এবং এয়ার এশিয়ার বিমান এখানে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আবার ব্যাঙ্কক ফিরে যায়। কিন্তু, স্পাইস ও ইন্ডিগোর ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কক থেকে বিমান কলকাতায় আসার পরে সেই বিমান উড়ে যায় দেশের ভিতরে অন্য শহরে।

শুল্ক অফিসারদের সন্দেহ, ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় নামার পরে স্পাইস ও ইন্ডিগোর বিমান কোন শহরে উড়ে যাবে তা আগেভাগে জেনে যাচ্ছেন পাচারকারীরা। এক অফিসার বলেন, ‘‘ধরুন, স্পাইসের নির্দিষ্ট ওই বিমানটি ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় এসে দিল্লি যাবে। সেই বিমানের ১৮এফ আসনের তলায় সোনা রাখা আছে। স্পাইসের ওই কলকাতা-দিল্লি উড়ানের টিকিট কেটে পাচারকারীর সঙ্গী হয় ওই আসনে, নয়তো তার কাছাকাছি কোনও আসনে গিয়ে বসবেন। তিনি জানেন, কোন আসনের ফাঁকে সোনা রয়েছে। বিমান থেকে নামার সময়ে তিনি সেই সোনা নিয়ে নেমে যাবেন। কলকাতা থেকে গিয়ে দিল্লিতে নামলে সেখানে তল্লাশির মুখেও পড়তে হবে না। দেশের অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের তল্লাশি করা হয় না।’’

অফিসারদের সন্দেহ, ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় নামার পরে যাঁরা বিমান পরিষ্কারের কাজ করেন,
তাঁদের কেউও এই পাচারকারীদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। তবে, এই কর্মীদের বিমানবন্দরে ঢোকা-বেরোনোর সময়ে তল্লাশি করা হয়। ফলে, সোনা সমেত তাঁদের ধরা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trafficking Gold trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE