হেয়ার স্কুলে সামনে রাস্তা অবরোধ অভিভাবকদের। —নিজস্ব চিত্র।
ছাত্রের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অতি নগণ্য। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও মেলেনি সুরাহা। স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে ফের রাস্তা অবরোধ করেছিলেন হেয়ার স্কুলের বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার! অবরোধের জেরে ওই এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। শেষমেশ ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতিতে চার ঘণ্টা পর উঠে গেল অবরোধ।
বুধবার সকাল ৮টা থেকেই হেয়ার স্কুলে সামনে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন অভিভাবকেরা। ব্যানার নিয়ে রাস্তাতেই গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। সেই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিরও দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রী ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হলে অবরোধ তুলবেন না বলেও জানান অভিভাবকেরা। তবে শিক্ষামন্ত্রী সেখানে উপস্থিত না হলেও তাঁর দফতর থেকে ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, হেয়ার স্কুলে পাঁচ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর।
এ দিন সকাল থেকে ওই অবরোধের জেরে কার্যত বন্ধ হয়ে যায় কলেজ স্ট্রিট। খবর পেয়ে লালবাজার থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন অভিভাবকেরা। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধ চলতেই থাকে। সকালের ব্যস্ত সময়ে অবরোধের জেরে ওই এলাকায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের।
আরও পড়ুন: স্কুলে নিয়োগের দায় বামেদের: শিক্ষামন্ত্রী
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজ স্ট্রিটে বিশাল পুলিশ বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুল সূত্রে খবর, হেয়ার স্কুলে প্রায় সাড়ে পাঁচশো পড়ুয়া রয়েছে। তাদের জন্য শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ৮। এর মধ্যে গত মাসে অবসর নিয়েছেন এক শিক্ষক। আগামী সেপ্টেম্বরে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তনুশ্রী নাগও অবসর নেবেন। ফলে শিক্ষকের সংখ্যা আরও কমে যাবে। পড়ুয়াদের তুলনায় অপর্যাপ্ত শিক্ষক ছাড়াও অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, হেয়ার স্কুলে আজকাল নিয়মিত ক্লাস হয় না বললেই চলে। আগে দু’টো পিরিয়ড হয়ে স্কুল ছুটি হয়ে যেত। এখন মেরেকেটে একটা ক্লাস হয়।
আরও পড়ুন: মানবিক হতে বাহিনীকে বার্তা সিপি-র
আরও পড়ুন: দেহ উদ্ধারের দেড় মাস পরে খুনের অভিযোগ
হেয়ার স্কুলে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে অভিভাবকদের অবরোধ অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও গত ১৭ জুলাই এই দাবি রাস্তা অবরোধ করেছিলেন তাঁরা। অভিভাবকদের দাবি, সে সময় গোটা বিষয়টিই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছিল। হেয়ার স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি মেটাতে অন্য জায়গা থেকে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে বলে আশ্বাসও দিয়েছিলেন পার্থবাবু। তবে তা হয়নি। উল্টে এক জন শিক্ষকের অবসরের পর হেয়ার স্কুলের শিক্ষক-সংখ্যা আরও কমেছে। ফলে ফের রাস্তা অবরোধের পথই বেছে নিয়েছিলেন অভিভাবকেরা।
শহরের অন্যতম প্রাচীন এই সরকারি স্কুলের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৮১৮ সালে। সেই ঐতিহ্যবাহী স্কুলের এ দূরাবস্থায় ব্যথিত শিক্ষামহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy