প্রতীকী ছবি।
বাসের রেষারেষি রুখতে বিধাননগর পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও হুঁশ ফিরছে না বাসচালকদের একাংশের। বৃহস্পতিবার ফের দু’টি বাসের রেষারেষির জেরে জখম হলেন দশ জন। ভিআইপি রোডের হলদিরাম বাসস্টপের কাছে এই ঘটনা ঘটেছে। দুই বাসের টক্করের মাঝে পড়ে বারাসত-বাবুঘাট রুটের একটি সরকারি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিমানবন্দর-টালিগঞ্জ রুটের একটি এসি বাসের পিছনে ধাক্কা মারে। ওই এসি বাসটি সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দু’টি অ্যাপ-ক্যাবে ধাক্কা মারে। সেই গাড়িটি আবার ধাক্কা মারে সামনে দাঁড়ানো একটি অটোকে। এই ঘটনায় জখম ১০ জনের মধ্যে সরকারি বাসের চালকের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ কৈখালি থেকে দু’টি মিনিবাস রেষারেষি করতে করতে তেঘরিয়ার দিকে যাচ্ছিল। সামনেই হলদিরাম বাসস্টপ থেকে কে আগে যাত্রী তুলবে, চলছিল তার প্রতিযোগিতা। সরকারি বাসটি বাঁ দিকের লেন দিয়ে হলদিরামের দিকেই যাচ্ছিল। সেই বাসটি ওই দুই মিনিবাসের মাঝে পড়ে যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে গিয়ে সেই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ধাক্কা মারে রাস্তার ধারের রেলিংয়ে, তার পরে টালিগঞ্জগামী একটি এসি বাসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসি বাসের পিছনের দিকে বসে থাকা যাত্রীরা সিট থেকে পড়ে যান। অনেকেই হাতে, পায়ে, কোমরে চোট পেয়েছেন। তবে সব থেকে বেশি আহত হয়েছেন সরকারি বাসের চালক। ওই বাসটির সামনের অংশ এতটাই তুবড়ে যায় যে, চালক কেবিনেই আটকে পড়েন। জানলা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। ওই এসি বাসের যাত্রী জাকির হুসেন বলেন, ‘‘হঠাৎ প্রবল জোরে ঝাঁকুনি। মনে হয়েছিল, গোটা বাসই উল্টে যাবে। খুব জোর বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গিয়েছি।’’ এসি বাসের সামনে থাকা একটি ক্যাবের যাত্রী বলেন, ‘‘সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল আমাদের গাড়িটি। হঠাৎ এসি বাসটি আমাদের ক্যাবের
পিছনে ধাক্কা মারল। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছি।’’
এ দিকে, এই ঘটনায় হলদিরাম সংলগ্ন ভিআইপি রোডের কলকাতামুখী রাস্তা যানজটের কবলে পড়ে। গাড়িগুলিকে সার্ভিস রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দিয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। বিধাননগরের পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, তাঁদের এলাকায় বাসের রেষারেষি রুখতে নানা ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। রাস্তায় স্পিড ব্রেকার তৈরি করা হয়েছে, বসানো হয়েছে সিসিটিভি। নিয়ম ভাঙলে নিয়মিত কেস-ও দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলাও রুজু করছে পুলিশ। পাশাপাশি, সচেতনতা শিবিরও করা হচ্ছে নিয়মিত।
এত সব সত্ত্বেও দুর্ঘটনা কমছে না কেন? বিধাননগর পুলিশের একাংশের দাবি, পরিকাঠামো সংস্কার হওয়ায় আগের থেকে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে। কিন্তু এখনও চালকদের একাংশের হুঁশ ফেরেনি। পরিকাঠামোর উন্নতির কাজ চলতে থাকবে। নিয়মভঙ্গের ক্ষেত্রেও কোনও রেয়াত করা হবে না। এই ব্যাপারে পুলিশ আরও কড়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy