Advertisement
E-Paper

এক কলেজে হাতাহাতি, অন্যত্র ঘেরাও

সোমবার ঝকঝকে কমন রুম ও ক্যান্টিনের দাবিতে দুপুর থেকে চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রায় পাঁচ ঘণ্টারও বেশি ঘেরাও করে রাখলেন তৃণমূলছাত্র পরিষদের সদস্যেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৩১
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও আন্দোলন রুখতে উপাচার্যের জন্য সুরক্ষা-বলয় তৈরি করতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। কারণ, বিভিন্ন কলেজের পাশাপাশি পড়ুয়াদের গোলমাল বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও। সোমবার ঝকঝকে কমন রুম ও ক্যান্টিনের দাবিতে দুপুর থেকে চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রায় পাঁচ ঘণ্টারও বেশি ঘেরাও করে রাখলেন তৃণমূলছাত্র পরিষদের সদস্যেরা। একই দিনে আনন্দমোহন কলেজে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল গড়াল থানা পর্যন্ত।

টিএমসিপি সূত্রের খবর, আনন্দমোহন কলেজের গোলমালের প্রধান কারণ অতিরিক্ত ভর্তি সংক্রান্ত সমস্যা। কলেজে অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির অভিযোগ নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, সে সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখেন, বেশ কয়েকটি কলেজ নির্ধারিত আসনের থেকে অতিরিক্ত ভর্তি নিয়েছে। তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি আনন্দমোহন কলেজে। সেখানে অতিরিক্ত ১১০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অতিরিক্ত কাউকেই রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে না।

এ দিনের গোলমালে সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে। অভিযোগ, কলেজে ভর্তি করানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজের ছাত্র সংসদের ভূমিকা থাকেই। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার ফলে আতান্তরে পড়েছেন পড়ুয়ারা। টিএমসিপি-র এক নেতার দাবি, যাঁদের দায়িত্বে কলেজে বাড়তি ছাত্র ভর্তি হয়েছে, তাঁরা দায় এড়াতে চাইছেন বলে তারই সংগঠনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বিরোধিতা শুরু করে। তার পরেই দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। এর পরে এক পক্ষ আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে একদল থানা ঘেরাও করে রাখে বলে অভিযোগ। এক ছাত্রীকে কটূক্তি করার পাল্টা অভিযোগও তোলা হয়। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, থানা ঘেরাওয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি। কেউ কোনও অভিযোগও জানাননি। কয়েক জন পড়ুয়াকে ব্যাঙ্কের নকল চালান দিয়ে ভর্তি করানোরও অভিযোগ ওঠে। যদিও এ রকম কোনও সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রেরা। পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ইচ্ছা করে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে না।

ওই কলেজের ছাত্র সংসদের এক সদস্য বলেন, ‘‘বাড়তি ছাত্র ভর্তি হওয়ায় আমাদের কলেজের বদনাম হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। তারই বিরোধিতা করতে গোলমাল শুরু হয়।’’ যাঁরা ওই পড়ুয়াদের কলেজে ভর্তি করিয়েছেন, তাঁদেরই রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে বলে দাবি তাঁর।

সম্প্রতি জয়পুরিয়া কলেজে কী কারণে ঘনঘন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাধে, তার বিস্তারিত রিপ‌োর্ট তলব করেছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। তখনই শিক্ষা মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছিল, যেখানে খোদ শাসক দল দ্বন্দ্বে রাশ টানতে পারেনি, সেখানে দফতর কী করবে? কয়েক দিনেই হাতেনাতে তার প্রমাণ মিলল।

অন্য দিকে, কমন রুম সৌন্দর্যায়ন এবং ঝাঁ চকচকে ক্যান্টিনের দাবিতে দুপুর দুটো থেকে ঘেরাও করে রাখা হল চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। এর পরে সন্ধ্যা পৌনে ছ’টা নাগাদ পড়ুয়াদের কাছে কার্যত মুচলেকা দিয়ে ঘেরাওমুক্ত হন সকলে। অধ্যক্ষ শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানান, এ বছর শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, সাড়ে তিন কাঠার উপরে ওই কলেজে আলাদা করে ক্যান্টিন করা সম্ভব নয়। তার পরেও এই দাবি ওঠায় বিরক্ত তিনি। পাশাপাশি, ঝাঁ চকচকে কমন রুম করার ক্ষেত্রে অনেকটাই টাকা খরচ করতে হবে। তাই সেটা একটু ভেবে দেখতে হবে।

Calcutta University Protest কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy