Advertisement
০১ মে ২০২৪

এপ্রিলেই এটিএম লুটের কারসাজি, ফুটেজ দেখেইনি ব্যাঙ্ক!

কোনও ব্যাঙ্ককর্তা তা দেখেননি! সেই নজরদারির ফাঁকেই উধাও গ্রাহকদের টাকা। এটিএম কাউন্টারে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তা হলে লাভটা কী, উঠছে প্রশ্ন। 

নজরে: নিরাপত্তা খতিয়ে দেখছেন ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা। গড়িয়াহাটের কাছে কানাড়া ব্যাঙ্কের একটি এটিএমে। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নজরে: নিরাপত্তা খতিয়ে দেখছেন ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা। গড়িয়াহাটের কাছে কানাড়া ব্যাঙ্কের একটি এটিএমে। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০২:০৩
Share: Save:

বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লোপাটের বিষয়টি যত চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে, তদন্তে দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্কের উদাসীনতার বহর তার থেকে কিছু কম চাঞ্চল্যকর নয়!

কেননা দুষ্কৃতীরা টাকা লুটের ‘অপারেশন’ চালিয়েছিল এপ্রিলে। কিন্তু ব্যাঙ্ককর্তাদের টনক নড়েছে তার তিন মাস পরে! পুলিশি সূত্রের খবর, এটিএমে দুষ্কৃতীদের ‘কার্ড কপিয়ার’ যন্ত্র বসানোর ভিডিয়ো এই তিন মাস ধরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা ছিল। কিন্তু কোনও ব্যাঙ্ককর্তা তা দেখেননি! সেই নজরদারির ফাঁকেই উধাও গ্রাহকদের টাকা। এটিএম কাউন্টারে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে তা হলে লাভটা কী, উঠছে প্রশ্ন।

গোয়েন্দারা ফুটেজ খতিয়ে দেখে জেনেছেন, এপ্রিলের গোড়ায় দু’বার কলকাতার অন্তত দু’টি এটিএমে ওই যন্ত্র বসায় দুষ্কৃতীরা। ভবানীপুরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমে যন্ত্র বসানো হয় ২ মে। প্রতি বারেই যন্ত্র বসানোর রাতে তা খোলা হয়েছে। লালবাজারের খবর, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমনে বারবার ব্যাঙ্ককর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে পুলিশ। নানা পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তবু এই হাল কেন? সব ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষই জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। এক ব্যাঙ্ককর্তা শুধু জানান, গাফিলতি কোথায় ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে। কলকাতায় কার্ডের তথ্য চুরির জেরে বুধবার পর্যন্ত ৭৬টি অভিযোগ জমা পড়ে। বৃহস্পতিবার আরও দু’টি অভিযোগ এসেছে। আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক রেডিয়ো-জকি।

কী ভাবে জালিয়াতি হয়? দেখুন ভিডিও

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পুলিশ দেখেছে, দুই যুবক রক্ষী-হীন এটিএমে ঢুকে ‘কার্ড কপিয়ার মেশিন’ লাগাচ্ছে এবং একটি কার্ড দিয়ে তা চালু করছে। দুই যুবকের মাথায় টুপি ছিল, মুখের অর্ধেক ছিল ঢাকা। কিন্তু দিল্লিতে যে-ফুটেজ মিলেছে, তার সঙ্গে ওই দুই যুবকের চেহারার মিল তেমন নেই। কলকাতার গ্রাহকদের টাকা তোলা হয়েছে দিল্লির দ্বারকা এলাকা থেকে। কারা টাকা তুলেছে, তদন্তকারীরা দিল্লি গিয়ে তা খতিয়ে দেখছেন। প্রতি বারেই যন্ত্র লাগানোর পরে একটি কার্ড যন্ত্রে ‘সোয়াইপ’ করছে দুষ্কৃতীরা। এটিএমে সেই কার্ডের নম্বরও ধরা পড়েছে। ফরেন্সিক বিজ্ঞানী, গোয়েন্দাকর্তা ও ব্যাঙ্ককর্তারা সেই নম্বর দেখে কার্ডটি কোন ব্যাঙ্কের, তা চিহ্নিত করতে পারেননি। সাধারণত এটিএম বা ক্রেডিট কার্ডে ১৬ সংখ্যার একটি নম্বর থাকে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দু’টি কার্ডে ১৬ সংখ্যার কোনও নম্বর নেই।

গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটে এই ধরনের যন্ত্র বিক্রি হয়। এই যন্ত্রের বেআইনি বিক্রি চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: এ বার অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক থেকেও টাকা গায়েব! ৫০ হাজার টাকা উধাও রেডিও জকি নীলাঞ্জনার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Footage ATM Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE