Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
ফুটপাত পথচারীদের জন্য। অন্তত আইন তো তা-ই বলে। তা হলে রাস্তায় নেমে কেন হাঁটতে হয় পথচারীদের? ফুটপাতে ওরা কারা? কাদের দখলে ফুটপাত? কেন চুপ পুলিশ, পুরসভা? ফুটপাতের ‘অধিকার’ থেকে কেন বঞ্চিত সাধারণ মানুষ?
Barasat

Barasat: হকার, অটোর ভিড়ে বারাসতে রাস্তা উধাও

বারাসত-যশোর রোডের চাঁপাডালি সংলগ্ন এলাকায় মাছের আড়ত থাকায়, ভোর থেকেই সেখানে মাছের গাড়ি, বাইক, সাইকেল জড়ো হয়ে যায়।

সঙ্কীর্ণ: রাস্তার দু’পাশই বাজারের দখলে। এমনই অবস্থা বারাসত কাছারি ময়দানের কাছে স্টেশন রোডের।

সঙ্কীর্ণ: রাস্তার দু’পাশই বাজারের দখলে। এমনই অবস্থা বারাসত কাছারি ময়দানের কাছে স্টেশন রোডের। ছবি: সুদীপ ঘোষ

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২২ ০৫:০৫
Share: Save:

পথের ধারেই কোথাও বসেছে বাজার, কোথাও দাঁড় করানো থাকে বাইক, সাইকেল। কোথাও আবার রয়েছে খাবারের দোকান। তারই মধ্যে দিয়ে কোনওক্রমে হেঁটে চলেছেন পথচারীরা। সামান্য অন্যমনস্ক হলেই হোঁচট খাওয়া অথবা ছোটখাটো দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রবল। তবু রাস্তার দখল ছাড়তে রাজি নন দখলকারীরা। সমস্যার সমাধানে আজ, বৃহস্পতিবার বারাসত পুরসভায় এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

বারাসত পুর এলাকা ঘুরলেই নজরে পড়ে, কলোনি মোড়, চাঁপাডালি, কাছারি ময়দান, কেএলসি রোডের মতো বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা দখল হয়ে গিয়েছে। কোথাও দখল করেছেন হকারেরা। কোথাও আবার সার দিয়ে দাঁড়িয়ে অটো। পুরসভার স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, হকার উচ্ছেদ করা দলের নীতি নয়। অন্য দিকে, অটোচালকেরা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত। যার জেরে সমাধানে কড়া পদক্ষেপ করা যায় না।

বারাসত এলাকা ঘুরে দেখা গেল, আনাজ বিক্রেতা, হকার, বাইক-সাইকেলের বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে স্টেশন সংলগ্ন রাস্তাটি অতি সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছে। রাস্তার দু’ধারের ওই জট এড়িয়ে কোনও স্থায়ী দোকানে পৌঁছতেও বেগ পেতে হয় ক্রেতাদের। প্রায় একই ছবি দেখা যাবে বারাসত আদালতের কাছে কেএলসি রোডে। ওই এলাকার উপর দিয়ে গিয়েছে উড়ালপুল। তার নীচে বসেন হকারেরা। স্থায়ী দোকানদারেরা জানান, শুধু তাঁরাই নন, বাসিন্দারাও হকারের সমস্যায় জর্জরিত।

অভিযোগ, পরিস্থিতি সব চেয়ে ভয়াবহ হয় চৈত্র সেলের সময়ে। পয়লা বৈশাখের আগে জিনিসপত্রের বিক্রি-বাটার তোড়ে রাস্তা কার্যত ভেসে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই জানাচ্ছেন, ওই সময়ে এত ভিড় হয় যে আবাসিক বাড়ির রাস্তায় গাড়ি-অ্যাম্বুল্যান্সও পৌঁছতে পারে না। জনস্রোত ঠেলে প্রিজ়ন ভ্যানে চাপিয়ে আসামিদের নিয়ে আদালতে পৌঁছতেও হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়ের দাবি, অতীতে ওই হকারদের সতর্ক করা হয়েছিল। যাঁরা উড়ালপুলের নীচে দোকান তৈরি করে ফেলেছেন, তাঁদের বলা হয়েছিল দোকানের মুখ রাস্তার দিকে না করতে। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে কথা শোনেন, অনেকে শোনেন না। বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বাজেট নিয়ে বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই রাস্তা দখল নিয়েও আলোচনা করা হবে।’’

শুধু ওই জায়গাগুলিই নয়, ন’পাড়া হাউজ়িংয়ের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কোনও কোনও অংশ, নবপল্লির মতো এলাকাতেও হকার ও বাজার ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। চাঁপাডালি মোড়ে আবার রাস্তা দখল করে রেখেছে অটোস্ট্যান্ড। তার জেরে গাড়ির রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হয় পথচারীদেরও। একই ধরনের ছবি দেখা যাবে কলোনি মোড় কিংবা ডাকবাংলো এলাকায়।

আবার বারাসত-যশোর রোডের চাঁপাডালি সংলগ্ন এলাকায় মাছের আড়ত থাকায়, ভোর থেকেই সেখানে মাছের গাড়ি, বাইক, সাইকেল জড়ো হয়ে যায়। তেমন অবস্থা থাকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। ফলে সহজেই ওই রাস্তায় যানজট হয়। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান চালালেও কিছু দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি পুরনো জায়গায় ফিরে আসে। বারাসত জেলা পুলিশের দাবি, পুরসভার তরফে সমস্যার কথা তাদের জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাই এ নিয়ে পুরসভাকেই উদ্যোগী হতে হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের কর্তারা।

বারাসত পুরসভার আশ্বাস, হকার কিংবা রাস্তায় বসা ব্যবসায়ীদের বেচাকেনার সুযোগ অক্ষুণ্ণ রেখেই বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু অটোর দৌরাত্ম্য? এ নিয়ে অবশ্য কোনও আশ্বাস দেননি পুর কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barasat hawkers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE