E-Paper

সংঘর্ষের পরের দিনও থমথমে বেলেঘাটা, মোতায়েন পুলিশ

দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রবিবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেলেঘাটা মেন রোডের আলোছায়া সংলগ্ন এলাকা। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের অফিসে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৩ ০৫:০৫
Political clash at beleghata

ধুন্ধুমার: গোলমালের পরে বেলেঘাটার ৯৫ নম্বর বস্তিতে ইতিউতি পড়ে ভাঙা চেয়ার। বসেছে পুলিশি পাহারাও। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় কেটে গেলেও আতঙ্ক কমেনি বেলেঘাটা এলাকায়। নতুন করে যাতে অশান্তি না ছড়ায়, তার জন্য সোমবারও এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। রবিবার সংঘর্ষের ঘটনায় গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার পুলিশি তল্লাশিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের অফিসের ভিতর থেকে একটি সেভেন এমএম পিস্তল এবং গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও রবিবার রাত থেকেই রাজু নস্করের দেখা মেলেনি।

দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রবিবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেলেঘাটা মেন রোডের আলোছায়া সংলগ্ন এলাকা। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের অফিসে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। যদিও ঘটনার আগের দিন রাতে রাজু নস্করের অনুগামীদের বিরুদ্ধে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধির ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, তারই পাল্টা জবাব দিতেই রবিবার দুপুরে রাজুর অফিসে চড়াও হন পুর প্রতিনিধির অনুগামীরা। লাঠি, লোহার রড নিয়ে দেদার ভাঙচুর চলে। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। দুই পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় পুর প্রতিনিধির ঘনিষ্ঠ টিঙ্কু দাস নামে এক জন আহত হন। তাঁর শরীরে গুলি লাগার চিহ্ন ছিল বলে খবর।

মূলত এলাকার দখলকে কেন্দ্র করেই শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর এই সংঘর্ষ বাধে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিকে শহরে দিনেদুপুরে এমন সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশি ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ঘটনার সময়ে পুলিশ পৌঁছলে তাদের সামনেই তাণ্ডব চলে বলেও অভিযোগ। তদন্তে নেমে বিকেল থেকেই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। দুই পক্ষের ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ৬ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

এ দিকে, এমন তাণ্ডবের ঘটনায় আতঙ্ক কাটছে না গোটা এলাকার। সোমবার সকালে কয়েকটি দোকান খুললেও অধিকাংশই ছিল বন্ধ। নতুন করে যাতে এলাকায় উত্তেজনা না ছড়ায়, তার জন্য উড়িয়াবাগান বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে আলোছায়া পর্যন্ত এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এলাকার দখলকে কেন্দ্র করে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি অলকানন্দা দাসের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে বিধায়ক পরেশ পাল ঘনিষ্ঠ রাজু নস্করের বিবাদ দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রবিবার সেটাই চরম আকার নেয়। যদিও রবিবার ঘটনার পরে ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ এলাকায় গোলমাল পাকাতেই হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রাজু। এ দিন অলকানন্দা দাস বলেন, ‘‘কী থেকে এই গোলমাল, আমরা জানি না। গতকাল আমি শহরে

ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সঠিক নয়। বেলেঘাটায় এই ধরনের গোলমাল আমরা কেউই চাই না। পুলিশকে বলব দল না দেখে ব্যবস্থা নিতে।’’ এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘পৃথক দু’টি মামলা রুজু হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজ চলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

beleghata TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy