রাস্তায় বসে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। মঙ্গলবার, বিধাননগরের নয়াপট্টিতে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
ক্লাবের সদস্য এক পুরপ্রতিনিধি। ভিতরে ঝুলছে তাঁর কাট-আউট। যদিও তেতলা সেই ক্লাব সরকারি জমির উপরে তৈরি বলে অভিযোগ। একটি মামলাকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাই কোর্ট রায় দিয়েছে, ক্লাবটি ভেঙে দিতে হবে। আর সেই ক্লাব ভাঙতে এসেই স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ায় ফিরে যেতে হল বিধাননগর পুরসভাকে। জনপ্রাচীরের সামনে কার্যত পুতুল হয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে শেষে পুলিশ ও পুরসভার আধিকারিকেরা ফিরে যেতে বাধ্য হন। যদিও দিনের শেষে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী দিনে আদালতের রায় কার্যকর করার পুনরায় চেষ্টা হবে।
ঘটনাস্থল, বিধাননগরের সংযোজিত এলাকা নয়াপট্টি। সেখানে রয়েছে ওই তেতলা ক্লাব। বিধাননগর পুরসভা জানিয়েছে, ওই ক্লাবটি সরকারি জমি দখল করে গড়ে উঠেছে। যার বিরুদ্ধে স্থানীয় এক বাসিন্দা তিন বছর আগে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। সম্প্রতি
হাই কোর্ট মামলার রায়ে ক্লাবটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ দিন সেই নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়েই জনপ্রাচীরের সামনে পড়ে পুলিশ ও পুর প্রশাসন খালি হাতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
এ দিন নয়াপট্টিতে ‘আদিত্য স্মৃতি সংঘ’ নামে তেতলা ওই ক্লাব ভাঙতে গেলে স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। রাস্তায় শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ক্লাবটি বহু পুরনো। সেখানে বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্ম হয় বলে সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন উত্তেজিত লোকজন। এমনকি, বোতলে কেরোসিন ভরে নিজেদের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিতে থাকেন তাঁরা। সে সব দেখে পুলিশ ও প্রশাসন পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
তেতলা ওই ক্লাবের দেওয়ালে ঝুলছে বিধাননগর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি জয়দেব নস্করের কাট-আউট। জয়দেব নিজেও জানিয়েছেন, তিনি ওই ক্লাবের সদস্য। ক্লাবটি ৪০ বছর আগে সরকারি জমির উপরে তৈরি হয়েছিল। জয়দেবের কথায়, ‘‘ক্লাবটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল বহু বছর। কয়েক বছর আগে সেটি সাজিয়ে-গুছিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে নাচ-গানের মহড়া-সহ নানা ধরনের কাজকর্ম হয়। আমি শুনেছি, ক্লাবটি ভেঙে ওই জমিতে প্রোমোটিংয়ের চক্রান্ত চলছে। সরকার তো ব্যক্তিগত জমি অধিগ্রহণ করেই। রাতারাতি কারা মালিক হয়ে গেল, সেটাই তো বুঝছি না।’’ কিন্তু সরকারি জমির উপরে ক্লাব যাঁরই তৈরি করা হোক, সেটা তো বেআইনি। এক জন পুরপ্রতিনিধি হিসাবে তাঁর কি উচিত নয় সরকারি কাজে সাহায্য করা?
জয়দেবের উত্তর, ‘‘আমি তো বাধা দিইনি। তবে, ক্লাবটি ভাঙার আগে সত্যিই কারও জমি সেটির ভিতরে রয়েছে কি না, তা সামনে আসুক। সব জায়গায় ক্লাব তো সরকারি জমিতেই হয়।’’
এ নিয়ে স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রবীর সর্দারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না। তবে যাঁদের জমি, তাঁরা মামলা করছেন বলে তিনি শুনেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy