Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বেহাল বাজারে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বহু বছরের পুরনো এই বাজারের বিল্ডিংকে অনেক আগেই বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কাপড়, আনাজ, মাছ-মাংস, চাল, মুদি মিলিয়ে তিনশোটির মতো দোকান নিয়ে রমরমিয়ে চলছে বাজার।

ভগ্নদশা: ভাঙাচোরা বাড়িতে চলছে ডাকঘর। নিজস্ব চিত্র

ভগ্নদশা: ভাঙাচোরা বাড়িতে চলছে ডাকঘর। নিজস্ব চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

বিল্ডিংয়ের দোতলার লোহার বিম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাজারের টিন কোথাও উড়ে গিয়েছে, কোথাও তা ভাঙাচোরা অবস্থায় বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাথায় পড়ে বড়সড় অঘটন ঘটার আশঙ্কায় দিন গুনছেন মানুষ। এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর এবং বাজারের মালিক সকলের কাছে অভিযোগ জানিয়েও হেলদোল নেই কারও। এমনই অভিযোগ করছেন দক্ষিণ কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের উপরে অবস্থিত সাদার্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বহু বছরের পুরনো এই বাজারের বিল্ডিংকে অনেক আগেই বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কাপড়, আনাজ, মাছ-মাংস, চাল, মুদি মিলিয়ে তিনশোটির মতো দোকান নিয়ে রমরমিয়ে চলছে বাজার। সাদার্ন মার্কেট বিল্ডিংয়ের দোতলায় একটি পোস্ট অফিস রয়েছে। তার পাশেই একটি গ্রন্থাগার আছে। বাজারের দোতলায় গিয়ে দেখা গেল, ছাদের চাঙড় খসে সব লোহার রড বেরিয়ে পড়েছে। দেওয়ালের পলেস্তরা খসে গিয়েছে। মানচিত্রের মতোই দেওয়ালে ছেয়ে গিয়েছে গাছের শিকড়। দোতলায় ওঠার সিঁড়ির রেলিংও উধাও। বাজারের প্রবেশপথে মিটার বাক্স থেকে ইলেকট্রিকের তার ঝুলছে বিপজ্জনক ভাবে।

আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘‘আমরা জতুগৃহে বসে ব্যবসা করছি। এখানে ইতিমধ্যেই তিন বার আগুন লেগে গিয়েছে। ইলেকট্রিকের তার বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে থাকায় ফের যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় আগুন লাগতে পারে।’’ সাদার্ন মার্কেট পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার সুরজিৎ রায়ের কথায়, ‘‘বিল্ডিং সংস্কারের জন্য একাধিক বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। কিছুই কাজ হচ্ছে না।’’ রাসবিহারীর বাসিন্দা এক প্রবীণ নাগরিকের কথায়, ‘‘পোস্টঅফিসে প্রায়ই আসতে হয়। অনেক বয়স্ক মানুষই আসেন। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠার রেলিং না থাকায় খুবই কষ্ট হয়।’’

ভগ্নদশা: উড়ে গিয়েছে টিনের চাল। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টি হলে ব্যবসায়ী-ক্রেতা সকলেই ভিজতে থাকেন। প্রখর রোদেও রেহাই নেই। জয়নগরের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘আমরা রাতে এই বাজারে অনেক কষ্ট করে থাকি। বহু বার আবেদন করা সত্ত্বেও বাজার সংস্কারের কাজ শু‌রু হয়নি। খুবই আতঙ্কে রয়েছি।’’ কেন সংস্কার হয়নি? উঠে আসছে, বাজারের মালিক ও ব্যবসায়ীদের দ্বন্দ্বের কথা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বাজারটির প্রকৃত মালিক ছিলেন ভবানীপুরের ব্যবসায়ী পার্থ রায়চৌধুরী। সূত্রের খবর, প্রায় পনেরো বছর আগে বাজারটি ব্যবসায়ী প্রদীপ কুন্দলিয়া কিনে নেন। সাদার্ন মার্কেট ব্যবাসায়ী সমিতির সম্পাদক আশুতোষ সাহাবক্সির অভিযোগ, ‘‘প্রদীপবাবু চক্রান্ত করে এই বাজার পুরোপুরি ভেঙে দিতে চাইছেন। আমরা কোনও ভাবেই তা হতে দেব না।’’ এ প্রসঙ্গে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘সবাইকে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। বাজার সংস্কারের পর ফের ব্যবসায়ীদের এখানেই দোকান দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Market Infrastructure Businessman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE