Advertisement
E-Paper

বেহাত সম্পত্তির তালিকা দিল ক্যাগ

পুরসভার সম্পত্তি বেহাত হওয়ার নমুনা পুর-কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। সম্প্রতি পুর-কমিশনারের কাছে এই সম্পর্কে এক চিঠিতে ক্যাগের রেসিডেন্ট অডিট শাখা জানিয়েছে, পুরসভার প্রকাশিত বইতে যে সব সম্পত্তি পুরসভার বলে জানানো হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে সেগুলির মালিক অন্য কেউ।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:১২

পুরসভার সম্পত্তি বেহাত হওয়ার নমুনা পুর-কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। সম্প্রতি পুর-কমিশনারের কাছে এই সম্পর্কে এক চিঠিতে ক্যাগের রেসিডেন্ট অডিট শাখা জানিয়েছে, পুরসভার প্রকাশিত বইতে যে সব সম্পত্তি পুরসভার বলে জানানো হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে সেগুলির মালিক অন্য কেউ। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। অনেক সম্পত্তি অসংরক্ষিত অবস্থায় আছে। সেগুলিকে ঠিক করে নিতে হবে।’’

পুরসভার স্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়ে প্রতি বছর বাজেটে একটি বই প্রকাশ করা হয়। বইটির নাম ‘ইনভেন্টরি অফ ইমমুভেবল্ প্রপার্টিজ’। ক্যাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই বইতে ১৭৭৩টি সম্পত্তির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। তাতে মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৯ লক্ষ ৫৭ হাজার কাঠা। এর মধ্যে ৯২৫টি সম্পত্তির কোনও অ্যাসেসি নম্বর নেই। অর্থাৎ, ওই সব সম্পত্তির মালিকানা কার, তা জানতে পারেনি ক্যাগ। বাকি ৮২৫টির ক্ষেত্রে অ্যাসেসি নম্বর রয়েছে। তার মধ্যে ২৩২টির ক্ষেত্রে সম্পত্তির মালিক কলকাতা পুরসভা নয়।

প্রশ্ন, তা হলে কলকাতা পুরসভার স্থাবর সম্পত্তির তালিকায় ওই সব সম্পত্তি রাখা হয়েছে কেন? পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের বাজেটেও ওই বইটি ছাপিয়ে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে দেওয়া হয়েছিল। তখনই এ ব্যাপারে কড়া নাড়িয়েছিল ক্যাগের রেসিডেন্ট অডিট শাখা। তখন পুর-কর্তারা জানিয়েছিলেন, জরুরি ভিত্তিতে খোঁজ নেওয়া হবে। সে সময়ে পুরসভার এক আমলা জানিয়েছিলেন, যে পরিমাণ সম্পত্তি বেহাত হওয়ার কথা জানিয়েছে ক্যাগ, তার বর্তমান মূল্য কয়েকশো কোটি টাকা। ক্যাগের চি‌ঠি পেয়েই পুরসভার অর্থ দফতর, চিফ ভ্যালুয়ার ও সার্ভেয়ার এবং রেভিনিউ-এর চিফ ম্যানেজারকে নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ। সেখানেই নির্দেশ দেওয়া হয়, কী ভাবে ওই সব সম্পত্তি অন্যের নামে গেল তা খুঁজে দেখতে হবে। কোথাও কোনও ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করতে হবে এবং ন’শোরও বেশি সম্পত্তি কেন অ্যাসেসমেন্ট করা হয়নি তা দেখতে হবে।

ক্যাগের চিঠি অনুসারে, এক বছরেও সেই কাজ করতে পারেনি পুরসভা। ২০১৫ সালের বাজেটে কাউন্সিলরদের যে বইটি দেওয়া হয়েছে, তা হুবহু পুরনো বইটিরই প্রতিলিপি। অর্থাৎ, এক বছরেও তা সংশোধন করা এবং আন-অ্যাসেসড্ সম্পত্তি অ্যাসেস করার কোনও কাজই হয়নি।

পুর-প্রশাসন কিছু না করলেও ক্যাগ ওগুলির মধ্যে থেকে ৮৪টি সম্পত্তির তালিকা নিয়ে সমীক্ষা চালানোর চেষ্টা করে। ক্যাগের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ এবং সংযোজিত কলকাতা মিলিয়ে ওই ৮৪টি কেস তারা নিয়েছিল। কিন্তু কলকাতা উত্তর ও সংযোজিত এলাকার অ্যাসেসমেন্ট দফতর থেকে কিছু কাগজপত্র চেয়েও মেলেনি। যে ক’টি সম্পত্তির কাগজ মিলেছে, তাতে ১৬টি ক্ষেত্রে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পুরসভার সম্পত্তি অন্যের নামে বদল হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে টেনিস কোর্ট, ক্লাব, স্কুল, দোকান-সহ বিল্ডিং এবং ফাঁকা জমিও রয়েছে। ওই তালিকার প্রতিলিপি তাঁরা পুর-প্রশাসনের হাতেও দিয়েছেন। শনিবার মেয়র জানান, পুরো তালিকা নিয়ে পুরসভাও সমীক্ষা চালাবে। পুর-সম্পত্তি বেহাত হতে দেওয়া যাবে না।

anup chattopadhyay cag illegally transfer kmc property inventory of immovable properties
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy