Advertisement
E-Paper

খাল বুজিয়ে বহুতল, ভুগছে দুই পুরসভা

মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক।’আর সেই ফাঁকের জেরেই ভুগছেন দু’-দু’টি পুরসভার বাসিন্দারা।বাণীকণ্ঠ খালের মাঝের অংশে প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকা বুজে গিয়েছে।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৭
বাণীকণ্ঠ খালের সেই ভরাট হওয়া অংশ। — সুদীপ ঘোষ

বাণীকণ্ঠ খালের সেই ভরাট হওয়া অংশ। — সুদীপ ঘোষ

মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক।’

আর সেই ফাঁকের জেরেই ভুগছেন দু’-দু’টি পুরসভার বাসিন্দারা।

বাণীকণ্ঠ খালের মাঝের অংশে প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকা বুজে গিয়েছে। সেই জমিতেই মাথা তুলেছে একের পর এক ইমারত, এমনকী বেসরকারি কলেজও। আর তার জের পোহাতে হচ্ছে দু’পাশে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম এবং বারাসত পুরসভার বেশ কিছু ওয়ার্ডকে। সামান্য বৃষ্টিতেই দাঁড়িয়ে যাচ্ছে জল। সিঁদুরে মেঘ দেখে তাতেই ডরাচ্ছেন এলাকার মানুষ। আর ক’দিন বাদে ভরা বর্ষায় এলাকা জলমগ্ন হয়ে কী আকার নেবে, সেই আশঙ্কাতেই দিন কাটছে তাঁদের।

বারাসত পুরসভার ৭ কিলোমিটার পেরিয়ে মধ্যমগ্রাম পুরসভায় ঢুকে আরও দেড় কিলোমিটার পথ গিয়েই হারিয়ে গিয়েছে বাণীকণ্ঠ খাল। প্রায় চার কিলোমিটার পরে ফের কেমিয়া খামারপাড়া প়ঞ্চায়েতের নালতের পোল থেকে ফের খালটি শুরু হয়েছে। তার পরে হাড়োয়ার কুলটি খাল হয়ে মিশেছে বিদ্যাধরী নদীতে। কিন্তু মধ্যমগ্রামের বাদু রোড সংলগ্ন মাঠপাড়া এলাকায় ওই চার কিলোমিটার হারিয়ে যাওয়া খালের উপরেই তৈরি হয়েছে বেসরকারি কলেজ, বিরাট ইমারত। দেখে বোঝার উপায় নেই, কস্মিনকালেও এখানে খাল ছিল।

কী ভাবে এমন ঘটল? সদুত্তর নেই পুরসভা বা প্রশাসনের কাছে। মধ্যগ্রামের বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘কী ভাবে তা দখল হল, জানা নেই। তবে খালটি সংস্কার করার জন্য ওই চার কিলোমিটার বুজে যাওয়া অংশ আমরা কেনার চেষ্টা করেছিলাম। রাজি করানো যায়নি। তবে ফের এ ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছি আমরা।’’ এর জন্য মৎস্যজীবীদেরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে রথীনবাবু আরও বলেন, ‘‘মাছ চাষিদের জন্য একটি সুড়ঙ্গ কেটে সেই পথে জল যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বারাসত থেকে আমাদের পুর-এলাকায় ঢোকার পরে খালের দেড় কিলোমিটার অংশও সংস্কার হয়েছে।’’

বাণীকণ্ঠ খালের প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার অংশ বয়ে গিয়েছে বারাসত পুর-এলাকা দিয়ে। কেন্দ্রের টাকায় কিছু দিন আগে সরোজ পার্ক থেকে দিগ্‌বেড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সংস্কারের কাজ হয়েছে। সেখানকার মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও সরোজপার্ক থেকে কাজিপাড়া এলাকায় খালের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশের কাজ এখনও হয়নি। সেখানে খালটি মজে ময়লা-আবর্জনায় ভরে গিয়ে নর্দমার আকার নিয়েছে।

এর ফলেই ভুগছেন সরোজ পার্ক, ক্ষুদিরাম পল্লি, বিধান পার্ক, কালিকাপুর, নিচুমাঠ, উত্তরায়ণ, কুইপুকুর, বাণীকণ্ঠনগর, বিজয়নগরের মতো বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। এলাকাবাসীর কথায়, বৃষ্টি ও নর্দমার কালো নোংরা জল মাখামাখি হয়ে ঘরে ঢুকে যায়। বৃষ্টি থামলেও জল নামতে লেগে যায় বহুক্ষণ। সামনেই বর্ষা, ফলে এখন থেকেই আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় মানুষ। বারাসত পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৌমেন আচার্য বলেন, ‘‘সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় আমার ওয়ার্ডেই। সংস্কার না হলে এ সমস্যা মিটবে না।’’

বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় জানান, বাকি তিন কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য আড়াই কোটি টাকা খরচ হবে। প্রথম দফায় খাল সংস্কারে এক কোটি টাকা মিলেছে পুর দফতরের থেকে। কাজের টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে সুনীলবাবু বলেন, ‘‘শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। কাজ হওয়ার পরে নথিপত্র পাঠালে দ্বিতীয় দফার টাকা আসবে। তা হলেই আমাদের পুর-এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া বাণীকণ্ঠ খালের গোটাটাই সংস্কার হয়ে যাবে।’’

কিন্তু মাঝের ওই চার কিলোমিটার অংশে ফের খাল কাটা না হলে মূল সমস্যা যে থেকেই যাচ্ছে? তা অবশ্য মেনে নিয়েছেন সুনীলবাবুও।

Madhyamgram Barasat Municipality Garbage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy