Advertisement
১১ মে ২০২৪
College Street

Bengali New Year: নববর্ষের আড্ডায় ফিরতে অধীর অপেক্ষায় বইপাড়া

গত দু’বছরে বাংলা নববর্ষ নিয়ম মেনে এলেও করোনার জেরে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া ছিল নিস্তেজ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৩২
Share: Save:

গত দু’বছরে বাংলা নববর্ষ নিয়ম মেনে এলেও করোনার জেরে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া ছিল নিস্তেজ। বইও প্রকাশিত হয়েছে হাতে গোনা। প্রকাশকদের অফিসে সাহিত্যিকদের আড্ডা, খাওয়াদাওয়ার সেই পরিচিত দৃশ্যও দেখা যায়নি। তবে এ বার করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় প্রকাশকদের আশা, আজ, শুক্রবার, নববর্ষের দিন বইপাড়া ধরা দেবে তার অতীতের মেজাজে।

বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা নিজেদের অফিস ফুল দিয়ে সাজাতে শুরু করেছে। সাহিত্যিকরা যেখানে বসে আড্ডা দেবেন, সেই সমস্ত চেয়ারও পরিষ্কার করা হয়েছে। মিষ্টির বরাতও চলে গিয়েছে দোকানে। কোনও কোনও প্রকাশক আবার বাড়ি থেকে সাহিত্যিকদের জন্য তাঁদের পছন্দের কোনও পদ রান্না করিয়ে য়ে আসবেন।

প্রকাশক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘করোনার জন্য গত বছর আমরা নিজেরাই প্রবীণ সাহিত্যিকদের নববর্ষের দিন কলেজ স্ট্রিটে আসতে বারণ করেছিলাম। ফোনেই শুভেচ্ছা বিনিময় করি। এ বার কিন্তু সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সবাই আসবেনও। খাওয়ার সঙ্গে আড্ডাও জমবে।’’

প্রকাশকেরা জানালেন, নববর্ষের দিন সাহিত্যিকদের অবস্থা হত সরস্বতী পুজোর পুরোহিতদের মতো। পরিচিত সব প্রকাশনার দফতরেই কিছু ক্ষণের জন্য যেতে হত। মিষ্টি, নোনতাও খেতে হত। শেষের দিকে খেতে না পারলে সেই খাবার পৌঁছে যেত বাড়িতে।

ত্রিদিববাবু বললেন, ‘‘কত যে মজার মজার গল্প হত! এক বার সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় আমার অফিসে এসে বড় বড় ডিমের ডেভিল দেখে বলেছিলেন, এটা কী বোমা? যখন ওঁকে বলা হল, এর নাম ডিমের ডেভিল, তখন উনি জিজ্ঞাসা করলেন, এর নাম ‘ডিমের ডেভিল’ বা ‘ডিমের শয়তান’ কেন? একে ‘ডিমের গড’ কেন বলা হবে না? তা হলে কি এটা খেলে শরীর খারাপ হবে?’’

আর এক প্রকাশক সুধাংশুশেখর দে জানালেন, এ বার নবীন ও প্রবীণ সাহিত্যিকদের অনেকেই বইপাড়ায় যাবেন বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনা বুঝিয়ে গিয়েছে, এখন অনলাইনেও বই বিক্রির বড় বাজার তৈরি হতে পারে। তাই নববর্ষ উপলক্ষে বাংলা বইয়ের একটা ওয়েবসাইটও শুরু হতে চলেছে। সেখানে সব প্রকাশনার বই থাকবে।’’

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আবার জানাচ্ছেন, নববর্ষের দিন নতুন বাংলা বই প্রকাশিত হওয়ার রেওয়াজটা সব থেকে বেশি ছিল বইমেলা চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত। বইমেলা চালু হওয়ার পর থেকে সেই মেলাকে কেন্দ্র করেই নতুন বই বেশি প্রকাশিত হতে শুরু করে। শীর্ষেন্দুবাবু বলেন, ‘‘নববর্ষের দিন আমি খুব বেশি বার বইপাড়ায় যাইনি। অনেক আগে যেতাম। বিভিন্ন প্রকাশনার অফিসে গিয়ে আড্ডা-খাওয়াদাওয়া চলত।’’

এ বছর বইমেলায় বেশ কয়েকটি বই বার করেছেন প্রকাশক শান্তনু ঘোষ। কিন্তু নববর্ষের দিনও হাত ফাঁকা নেই তাঁর। শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘এ বার আমরা একটি নতুন বই প্রকাশ করছি। নববর্ষ উপলক্ষে সাহিত্যিক ও সাধারণ ক্রেতাদের জন্য মিষ্টি ও নরম পানীয়ের ব্যবস্থা থাকছে।’’ আর এক প্রকাশক পার্থশঙ্কর বসু বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সবে স্বাভাবিক হয়েছে। তাই এ বার নববর্ষ উপলক্ষে খুব বেশি বই প্রকাশ করতে পারছি না। তবে নববর্ষের দিন অফিসে যাঁরা আসবেন, তাঁদের আপ্যায়নে ত্রুটি রাখব না। অতিমারি সবে কমেছে। তাই পরের বছর আরও ভাল করে সব কিছুর আয়োজন করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

College Street
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE