Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পার্কে দূষণ-শর্ত মানলে তবেই কাজের বরাত

শুধু পার্কের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ রাখাই নয়। সেখানে কোনও সামগ্রী থেকে কোনও ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে কি না, তা-ও নজরে রাখতে হবে। যে সব ঠিকাদার সংস্থা পার্কে রক্ষী সরবরাহ করে, তারা এই শর্ত মানলে তবেই তাদের কাজের বরাত দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।

রবীন্দ্র সরোবর। ফাইল চিত্র

রবীন্দ্র সরোবর। ফাইল চিত্র

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৯
Share: Save:

শুধু পার্কের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ রাখাই নয়। সেখানে কোনও সামগ্রী থেকে কোনও ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে কি না, তা-ও নজরে রাখতে হবে। যে সব ঠিকাদার সংস্থা পার্কে রক্ষী সরবরাহ করে, তারা এই শর্ত মানলে তবেই তাদের কাজের বরাত দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।

কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, পার্কের দেখভাল সংক্রান্ত কোনও প্রকল্পে দরপত্র আহ্বান করার সময়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণের এই শর্ত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। দরপত্রের জন্য নির্দিষ্ট ফর্মেও তা উল্লেখ করা থাকছে। সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রত্যেক কর্মী এই শর্ত মেনে কাজ করতে বাধ্য থাকবেন। যদি দেখা যায় কোনও ভাবে পার্কে দূষণ ছড়াচ্ছে, তা হলে সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তারক্ষী এবং ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আগে পার্কের নিরাপত্তারক্ষীদের দূষণের বিষয়টি নজরদারি না করলেও চলত। কিন্তু গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্র সরোবরে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের জন্য যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে, সেখানে তাঁদের এই বাড়তি দায়িত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, কেএমডিএ-র অধীনে থাকা সব পার্কের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তাঁদের কথায়, রাস্তা, সেতু বা বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও শর্ত না থাকলেও সেখানে উল্লেখ করা থাকে, দূষণ ঠেকানোর বিধি মেনেই যেন কাজ করা হয়।

পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কোনও কাজে যাতে প্লাস্টিক এবং অন্যান্য বর্জ্য থেকে দূষণ না ছড়ায়, তার জন্যই কেএমডিএ-র তরফে সতর্কতামূলক এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে খবর। সংস্থার আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, অনেক কর্মী প্লাস্টিকের যথাযথ ব্যবহার নিয়ে সচেতন নন। যেখানে সেখানে প্লাস্টিক এবং থার্মোকল ছড়ানোর ফলে দূষণ হয়। আগুন জ্বালানো থেকে ক্ষতি হয় গাছপালার। তা থেকেও দূষিত হয় পরিবেশ। এই অবস্থা ঠেকাতে পার্কের পুকুরে যাতে দুধ বা তেল ফেলা না হয়, সে দিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পুকুরে স্নান করা বা কাপড় কাচার ক্ষেত্রে যাতে নিষেধাজ্ঞা মানা হয়, তা-ও লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে।

কেএমডিএ-র এক আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে কেএমডিএ। শহরে তাদের মালিকানায় বিভিন্ন পার্ক রয়েছে। সেগুলি দেখভালের জন্য নিরাপত্তারক্ষী এবং সাফাইকর্মী প্রয়োজন হয়। কেএমডিএ-র নিজস্ব কর্মী ছাড়াও ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে বাড়তি কর্মী নিয়োগ করা হয়। তবে মূলত প্লাস্টিক-দূষণ ঠেকানোর জন্য দরপত্রের ফর্মে এই নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, পার্কের রক্ষীরা যাতে সব দিক থেকেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সচেতন থাকেন তার জন্য তাঁদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পার্ক এবং সরোবরের দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন জায়গায় হোর্ডিং, প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার দেওয়া হচ্ছে।

তবে কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের মালিকানায় থাকা পার্ক বা উদ্যানগুলি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগে এখনও পর্যন্ত এমন নিয়ম নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ভাবনা-চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন পুরসভার উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Security Guard Pollution Tender KMDA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE