Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জলাভূমি বুজিয়ে অবৈধ নির্মাণ, মানলেন মেয়র

মেয়র বলেন, ‘‘এ সব তো কয়েক বছরে নয়, দীর্ঘ বছর ধরে হয়েছে। মানুষ তো বহু বছর ধরে ওখানে বাস করছেন!’’

এভাবেই গড়ে উঠছে একের পর এক বহুতল। —ফাইল ছবি

এভাবেই গড়ে উঠছে একের পর এক বহুতল। —ফাইল ছবি

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫১
Share: Save:

বাইপাসের ধারে নয়াবাদ এলাকায় জলাভূমি বুজিয়ে হাজার হাজার ফ্ল্যাট গড়ে ওঠার অভিযোগ অবশেষে স্বীকার করে নিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। যদিও এ সবের সিংহভাগই বাম আমলে হয়েছে বলে দাবি তাঁর। মেয়রের মতে, ‘‘প্রায় ১৫ হাজার ফ্ল্যাট ওই ভাবেই গড়ে উঠেছে। এমন অনেক তিন-চারতলা বাড়ি, ফ্ল্যাট রয়েছে যার বিল্ডিং ও নিকাশির অনুমোদন নেই, মিউটেশন নেই। পুরসভা কর পায় না।’’ সব জেনেও পুরসভা নিরুপায় বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

কেন নিরুপায়? মেয়র বলেন, ‘‘এ সব তো কয়েক বছরে নয়, দীর্ঘ বছর ধরে হয়েছে। মানুষ তো বহু বছর ধরে ওখানে বাস করছেন!’’ তিনি জানান, একটা সময়ে ওই রাস্তা ধরে ভোজেরহাটের দিকে যেতে চোখে পড়ত, ভেড়ি আর জলাশয়। ধীরে ধীরে সে সব কংক্রিটে ভরে গিয়েছে। এমনকি সায়েন্স সিটির কাছ থেকে যে খাল বয়ে গিয়েছে তার দু’ধারে পুরসভার জায়গাও বেদখল হয়েছে।’’

এলাকার মানুষের অভিযোগ, মৎস্য দফতর থেকে ‘নো অবজেকশন’ নিয়ে ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জমির চরিত্র বদলের কাগজ বার করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, সে সব নথি যাচাই করে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগই জাল। অথচ সে সব জমা নিয়েই পুরসভা বিল্ডিং তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। এক পুর কর্তার দাবি, গত দু’-তিন দশক ধরে এ ভাবেই জলাভূমির উপরে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছে।

কী বলছে পুরসভার বিল্ডিং দফতর? খোদ মেয়র এই দফতরের দায়িত্বে। তাঁর দাবি, পরিবেশমন্ত্রী থাকার সময়েই এ নিয়ে খোঁজ শুরু হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই জমির চরিত্র পরিবর্তনের জাল নথি জমা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের কারা ওই ঘটনায় জড়িত তা দেখা হবে।’’

সম্প্রতি নয়াবাদে জলাশয় ভরাট করে বেআইনি নির্মাণের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়। এর পরেই তিনি যাদবপুর বিধানসভা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বিষয়টি দেখতে বলেন। পুরসভা এবং জেলা প্রশাসন-সহ মৎস্য, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেন অরূপবাবু। যদিও সে দলে মেয়র ছিলেন না।

সিদ্ধান্ত হয়, জলাভূমি বুজিয়ে নির্মাণ রুখতে কোমর বেঁধে নামবে পুর প্রশাসন। এর পরেই দফায় দফায় বৈঠক হয় পুরভবনে। তারই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি শোভনবাবু বলেন, মানুষকে সচেতন করতে ওই এলাকায় প্রায় আড়াইশোর মতো হোর্ডিং লাগানো হবে। তাতে উল্লেখ থাকবে, জায়গাটা জলাভূমি। মৎস্য দফতরের আইন অনুযায়ী জলাভূমি বোজানো যাবে না। আইন ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যদিও এই প্রচেষ্টা নিয়ে সন্দিগ্ধ পুরসভারই একাংশ। তবে পুরসভা সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে নয়াবাদ মিনি বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাড়ি ভেঙে দিয়েছে পুর প্রশাসন। তালিকায় রয়েছে আরও কয়েকটি।

কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আনন্দবাজার পত্রিকার কলকাতা বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Housing Mayor Nayabad Land
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE