—প্রতীকী ছবি
দুর্গাপুজোর মরসুমে ডেঙ্গির দাপট রীতিমতো আতঙ্কের আকার নিচ্ছে। কলকাতার একাধিক সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের ভিড়ও ক্রমেই বাড়ছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি মৃত্যু মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডেঙ্গি আক্রান্তের চিকিৎসায় প্লেটলেট জরুরি, সেখানে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে এখনই রক্তের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। মহালয়ার আগেই শুরু হওয়া উৎসবের মরসুমে একাধিক রক্তদান শিবির বাতিল এর অন্যতম কারণ।
পাশাপাশি বছরভর রোগীর রক্তের চাহিদাও রয়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকেই রক্তদান শিবির বাতিল শুরু হয়েছে। সপ্তাহান্তের রক্তদান শিবিরও হয়নি। ফলে টান পড়েছে সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক, আর জি কর, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ-সহ একাধিক সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শনিবার পর্যন্ত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ২৩, এসএসকেএমে ২০, আর জি করে ৪০, এন আর এসে ৯৭ ইউনিট প্লেটলেট রয়েছে। সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে কোনও প্লেটলেট মজুত নেই। এই পরিস্থিতিতে এসএসকেএম হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। তবে, সেই শিবিরে সাত জন মাত্র রক্তদাতা ছিলেন।
প্রতি বছরই উৎসবের মরসুমে রক্ত সঙ্কটের অভিযোগ ওঠে। গত কয়েক বছর ধরে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ডেঙ্গির দাপট বাড়ায় রক্তের চাহিদা বাড়ে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে চাহিদা মেটাতে মোবাইল ব্লাড ব্যাঙ্ক-সহ একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের জোগান না থাকলে কী ভাবে মোবাইল ব্লাড ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামলানো হবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ জানান, শহরের হাসপাতালের রোগীদের পাশাপাশি জেলাগুলো কলকাতার ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরে নির্ভর করে। বারুইপুর, বারাসত, শ্রীরামপুর-সহ কলকাতার আশপাশের একাধিক জেলাস্তরের ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির ‘মাদার ব্লাড ব্যাঙ্ক’ হিসাবে কোথাও আর জি কর, কোথাও এন আর এস হাসপাতাল নির্ধারিত হয়েছে। তাই শহরের সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তসঙ্কট হলে রাজ্য জুড়ে সমস্যা তৈরির ঝুঁকি থাকে। পাশাপাশি, রক্তদাতা নিয়ে গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় রোগীর পরিজনেরা রক্ত পান না। ফলে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত কিনতে ভুক্তভোগীদের ইউনিট পিছু কয়েক’শো টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। এ বছরও পুজো শুরু হতেই একাধিক ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা ছুটিতে চলে গিয়েছেন। ফলে কী ভাবে কর্মীসঙ্কট মেটানো যাবে তা নিয়েও কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই স্বাস্থ্য ভবনের কাছে।
তবে সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তসঙ্কট প্রসঙ্গে অবশ্য এ দিন স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তা জানান, পুজোর মরসুমে চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় রক্তের জোগানের পাশাপাশি অন্যান্য পরিষেবাও বজায় রাখতে কন্ট্রোল রুম তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে এ সবের উপরে নজরদারি চালানো হবে। রক্ত না পাওয়ার জেরে চিকিৎসায় সমস্যা হয়েছে, এমন অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy