Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ইস্ট ওয়েস্ট নিয়ে বাবুলের মন্তব্যে বাড়ল সংশয়

ডালহৌসি চত্বরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নির্মাণের পথে ‘হেরিটেজ’ জট কি কাটবে? সোমবার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র একটি মন্তব্যের পরে এমনই প্রশ্ন ঘুরছে অনেকের মুখে। কেউ কেউ আবার তুলেছেন বিতর্কও।

সরেজমিন: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

সরেজমিন: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪১
Share: Save:

ডালহৌসি চত্বরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নির্মাণের পথে ‘হেরিটেজ’ জট কি কাটবে? সোমবার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র একটি মন্তব্যের পরে এমনই প্রশ্ন ঘুরছে অনেকের মুখে। কেউ কেউ আবার তুলেছেন বিতর্কও।

দেশের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের নিয়ম অনুযায়ী, ‘হেরিটেজ’ ভবনের ১০০ মিটারের মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ি নিষিদ্ধ। কারণ, তাতে ওই সৌধের ভিতের ক্ষতি হতে পারে। নষ্ট হতে পারে দেশের ঐতিহ্য। ১০০ থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ি করতে হলে অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু এ দিন হাওড়ায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ পরিদর্শনের পরে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানান, আইআইটি-র সমীক্ষায় উঠে এসেছে হেরিটেজ ভবনের ৩০ মিটারের মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ি করা যেতে পারে। এই রিপোর্টের কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পেশ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

এখানেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, একটি রিপোর্টকে কেন্দ্র করে কি দেশের আইন বদলানো যায়? নাকি আইনকে পাশ কাটিয়ে জট কাটানোর কথা ভাবছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? কারণ, বিবাদী বাগে কারেন্সি বিল্ডিং পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ চিহ্নিত ‘হেরিটেজ’। ব্রেবোর্ন রো়ডে ইহুদিদের দু’টি উপাসনালয় বা সিনাগগ রয়েছে। সেগুলিও ‘হেরিটেজ’। এই কারণেই ওই এলাকায় মেট্রো নির্মাণে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাচ্ছে না। রুটে বদল করা যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।

এ দিন বাবুল দাবি করেছেন, বহু দিন আগে ওই আইন পাশ হয়েছিল। তার পরে প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে।
সে কারণে খড়্গপুর আইআইটি-কে দিয়ে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। আইআইটি-র তরফে জানানো হয়েছে, হেরিটেজ ভবনগুলি থেকে যে
দূরত্বে লাইন বসানোর কথা, সেখানে কোনও অসুবিধে হবে না। ৩০ মিটারের দূরত্বের মধ্যে মাটির তলা দিয়ে
মেট্রোর লাইন গেলে কোনও ক্ষতি হবে না। এ নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক গুপিনাথ ভাণ্ডারী বলেন, ‘‘ক্ষতি হবে কি না, তা ওই এলাকার মাটির চরিত্র বিশ্লেষণ করে বলা যাবে। ১০০ মিটারের কম হলে সৌধের ক্ষতি
যে হবেই, এমনটা সব সময়ে না-ই ঘটতে পারে।’’

বাবুল জানান, এখনও পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজে এই আর্থিক বর্ষেই সব থেকে বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই কাজ দ্রুত শেষ করতে তৎপর কেন্দ্রীয় সরকার। সল্টলেক থেকে ফুলবাগান ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘দত্তাবাদে জবরদখলের কিছু সমস্যা ছিল। আপনারা ঝালমুড়ি-কাণ্ডকে কুখ্যাত বলুন আর যা-ই বলুন, তখনই দিদিকে দত্তবাদের কথা বলেছিলাম। ববিদা (পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম), সব্যসাচী দত্তের (বিধাননগরের মেয়র) সঙ্গেও কথা হয়েছিল। সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করেছে।’’ বাবুল আরও জানান, হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত গোটা অংশই মাটির তলায় থাকবে। স্টেশনে আত্মহত্যা রুখতে অটোমেটিক স্ক্রিন ডোর থাকবে। ট্রেন এলে নিজে থেকে তা খুলে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE