Advertisement
E-Paper

মাথায় ‘দাদা’র হাত, সিভিক পুলিশে দুষ্কৃতীরাও

সিভিক ভলান্টিয়ার বাহিনী শুরু হয়েছিল পাড়ার ‘ভাল’ ছেলেদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে নোটিস বেরোয়। আবেদনপত্রও জমা পড়ে। কিন্তু চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে লাগে ‘দাদা’দের সুপারিশও। পুলিশের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে, এই সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগের আগে প্রার্থীর সম্পর্কে সবিস্তার খবরও নেওয়া হয় না। যার জেরে অনেক ‘দুষ্কৃতী’ও সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজে ঢুকে পড়ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০০:৪৯

সিভিক ভলান্টিয়ার বাহিনী শুরু হয়েছিল পাড়ার ‘ভাল’ ছেলেদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু পুলিশ সূত্রের খবর, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে নোটিস বেরোয়। আবেদনপত্রও জমা পড়ে। কিন্তু চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে লাগে ‘দাদা’দের সুপারিশও। পুলিশের অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে, এই সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগের আগে প্রার্থীর সম্পর্কে সবিস্তার খবরও নেওয়া হয় না। যার জেরে অনেক ‘দুষ্কৃতী’ও সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজে ঢুকে পড়ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ট্যাক্সি লুঠের চেষ্টার অভিযোগে এক সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ ২ যুবককে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। ধৃতদের নাম প্রশান্ত হালদার ও অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের বাসিন্দা প্রশান্ত ভবানীপুর ট্রাফিক গার্ডে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কর্মরত। প্রশান্তের বন্ধু অভীকের বাড়িও কালীঘাটে। পুলিশ জানায়, বছরখানেক আগেও ভবানীপুরে অস্ত্র দেখিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে এক সিভিক ভলান্টিয়ার গ্রেফতার হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কালীঘাট থেকে একটি ট্যাক্সিতে ওঠে প্রশান্ত ও অভীক। ট্যাক্সিচালক রাজারাম যাদবকে গড়িয়াহাট যেতে বলে তারা। ওই চালকের অভিযোগ, ট্যাক্সিটি দেশপ্রিয় পার্ক পৌঁছলে ভোজালি বার করে দু’জন ভয় দেখায়, যেখানে তারা যেতে বলবে, সেখানেই যেতে হবে। রাজারাম জানান, কিছু দূর গিয়ে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে একটি পুলিশ কিয়স্কের কাছে ট্যাক্সি থামিয়ে দ্রুত নেমে চেঁচাতে শুরু করেন তিনি। অভীক পালালেও ধরা পড়ে যায় প্রশান্ত। তাকে জেরা করে অভীককে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

লালবাজারের খবর, থানা এবং ট্রাফিক গার্ডে পুলিশকর্মীদের সাহায্য করতে ‘গ্রিন পুলিশ’ হিসেবে এলাকার বেকার ছেলেদের নিয়োগের প্রকল্প নিয়েছিল বাম সরকার। বাহিনীর সদস্য খুঁজতে পাড়ায় পাড়ায় ‘ফ্রেন্ডশিপ কাপ’ চালু করে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের ‘কমিউনিটি পুলিশ’ প্রকল্পের আওতায় এনেই গ্রিন পুলিশ নিয়োগ শুরু হয়। তৃণমূল সরকার আসার পরে এই বাহিনীর সদস্য বাড়ে। সম্প্রতি তাদেরই নাম দেওয়া হয় সিভিক ভলান্টিয়ার। ঠিক হয়েছিল, প্রত্যেক থানার অফিসারেরা নিজেদের এলাকা থেকে এই বাহিনীর উপযুক্ত ছেলে বাছাই করবেন। তাঁদের কোনও অপরাধ সংস্রব কিংবা গুন্ডামির নজির রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু পুলিশের অন্দরের খবর, গত কয়েক বছরে সিভিক ভলান্টিয়ারকে ‘কাজ পাইয়ে দেওয়ার’ প্রকল্প হিসেবেই নিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশকর্তাদের একাংশ। অভিযোগ, কে কে চাকরি পাবে, সেটা আগেভাগেই ঠিক করে নেন তাঁরা। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের এক ওসি-ও এই নিয়োগের তদ্বির করেন।’’

কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার বাহিনী নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কমিশনার (২) জয়ন্ত বসু ফোন বা এসএমএসের উত্তর দেননি। তবে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার জানান, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।

Controversy Civic volunteer recruitment lalbazar Desoprio Park kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy