Advertisement
E-Paper

হাসপাতাল লুটে নিচ্ছে, পরপর অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায়

একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আবার রোগীকে রেমডিসিভিরের জন্য ২১ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও রোগীকে তা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৬:০১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কারও থেকে ৪৫ ঘণ্টা অক্সিজেন দেওয়ার জন্য এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কোথাও সঙ্কটজনক রোগীর চিকিৎসা শুরু না করেই ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, খোঁজ করতে যাওয়া ওই রোগীর পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রোগী ‘নিখোঁজ’! অন্য এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ, নির্দিষ্ট ওষুধ রোগীকে দেওয়া হবে বলে ২১ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও সেই ওষুধ দেওয়া হয়নি!

শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই বহু অভিযোগ উঠছে। গত কয়েক দিনে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান কোভিড আবহে কাজ শুরু করা বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠেছে, অতিমারির সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্যে কি এই হাসপাতালগুলির দিকে নজর থাকছে না পুলিশ-প্রশাসনের?

সমাজমাধ্যমে ঘুরতে থাকা এক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, নিউ টাউন এলাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর পরিবারের সঙ্গে কার্যত খণ্ডযুদ্ধে নেমেছেন কর্মীদের একাংশ। খোঁজ করে জানা গিয়েছে, বছর ৭৮-এর ওই রোগীর নাম শান্তিকুমার পাল। তিনি আর তাঁর বৃদ্ধা স্ত্রী সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হন। অন্য কোথাও শয্যা না পেয়ে তাঁদের মেয়ে-জামাই সেখানে ভর্তি করান। বৃদ্ধের নাতনি প্রেরণা কুণ্ডু বলেন, “দাদুর অক্সিজেন কমে যাচ্ছিল, অবস্থা খারাপ হচ্ছিল দেখে গত বুধবার ওখানে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রথমেই ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দাদু কেমন আছে জানতে ফোন করলে বলা হয়, ওই নামে কোনও রোগীই নেই। পরে বলে রোগী নিখোঁজ!” পরদিনই সকালে ওই হাসপাতালে ছোটেন বৃদ্ধের পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, “গিয়ে দেখি, রোগীকে ফেলেই রাখা হয়েছে। কী চিকিৎসা হয়েছে জানতে চাওয়ায় কিছুই দেখানো হবে না বলে দেওয়া হয়। উল্টে ৯০ হাজার টাকা না দিলে রোগীকে ছাড়া হবে না বলা হয়।” এর পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ওই রোগীকে কোনও মতে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলে
পরিবারের দাবি।

একই অভিযোগ, বিকাশচন্দ্র কুণ্ডু নামে অন্য রোগীর পরিবারের। তারা জানান, গত ৬ তারিখ বিকাশবাবুর বছর একাত্তরের স্ত্রী অনিতাদেবীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরদিন থেকে বিকাশবাবুরও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ঝুঁকি নিতে চায়নি পরিবার। অনেক খোঁজ করে বৃদ্ধকে শেষে ৭ মে দুপুরে পার্ক সার্কাসের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

অভিযোগ, ভর্তির সময়েই এক লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। দু’দিনের শয্যার খরচ ৮০ হাজার টাকা জমা করে পরিবার।সরকারি হাসপাতালে শয্যা পাওয়ায় ৯ তারিখ রোগীকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে হাসপাতাল থেকে তিন দিনের এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অভিযোগ, সেই টাকা দিয়ে রোগীকে ছাড়ানো হয়। কৌশিক মণ্ডল নামে বিকাশবাবুদের এক আত্মীয় বলেন, “স্বাস্থ্য ভবনে অভিযোগ দায়ের করছি। ৪৫ ঘণ্টা শুধু অক্সিজেন দেওয়ার জন্য এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা বিল?”

ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আবার রোগীকে রেমডিসিভিরের জন্য ২১ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও রোগীকে তা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ইএম বাইপাসের ওই হাসপাতালের কর্তাদের কেউই এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে পার্ক সার্কাস এবং নিউ টাউনের দুই অভিযুক্ত হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ একই বলে জানা গিয়েছে।সেখানকার কর্ণধার প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “যে রোগীর পরিবার টাকা দিতে চাইছেন না, তাঁরাই ঝামেলা করে ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে তুলে দিচ্ছেন। সাইবার থানায় অভিযোগ করছি।”

স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, “প্রচুর অভিযোগ আমরাও পাচ্ছি। তবে সমাজমাধ্যমে কিছুরই বিচার হতে পারে না। আমাদের অভিযোগ করলে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।”

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy