‘চার দিকে দাউদাউ করে আগুন ধরে গিয়েছে। তার হাত থেকে কে কত দূর বাঁচতে পারবেন, সেই অনিশ্চয়তায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ!’— অতিমারির আঁচে একের পর এক আক্রান্ত হওয়ার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এমনটাই মনে করছে শহরের চিকিৎসক মহল। তাঁরা বিস্মিত আগামী ২২ জানুয়ারি কলকাতা সংলগ্ন বিধাননগর এবং জেলার অন্য চারটি পুর নির্বাচন নিয়েও। কারণ সকলেরই
মত, যে কোনও জমায়েত ‘ঘি’-এর কাজ করছে। আর চিকিৎসকদের মতে, সংক্রমণের আগুনে সেই ‘ঘি’ পড়লে আক্রান্ত বাড়বে, কমবে না।
রাজ্যের কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভাবা উচিত। তবে তা দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে সদর্থক ভাবনাচিন্তা হওয়া প্রয়োজন। যে ভাবে চার দিকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে, তাতে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় যা-ই হোক না কেন, এত মানুষের সমাগম কোনও ভাবেই ঠিক নয়।’’ ২২ তারিখের নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমার শেষ দিন ছিল সোমবার। সেখানে কোভিড-বিধি হেলায় উড়িয়ে কেমন ভিড় হয়েছে, সেই ছবি দেখা গিয়েছে বিধাননগর থেকে অন্যত্র। ওই দিনই নির্বাচন কমিশন এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, ভোট-প্রচারে বন্ধ থাকবে রোড-শো এবং র্যালি। তবে বড় মাঠে প্রবেশ ও প্রস্থানের পথ আলাদা রেখে সর্বাধিক ৫০০ জনকে নিয়ে জনসভা করা যাবে। সভাগৃহে ৫০ শতাংশ আসন কিংবা সর্বাধিক ২০০ জনকে নিয়ে রাজনৈতিক সভা করা যাবে।
যা শুনে বিস্মিত চিকিৎসকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘এটা তো অনেকটা ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চালানোর মতো হল। বিষয়টিতে নজরদারি করবে কে?’’ তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে বিধানসভা ভোটের সময়েও এমন বিভিন্ন বিধি জারি করা হয়েছিল। কিন্তু, তা মানা হয়েছিল কতটা?