‘‘কোথায় আলো?’’
‘‘মানুষ আলো চাইছেন। আমরা কিছু বলতে পারছি না। ঘোষণা করা হয়েছে এলইডি লাগানো হবে। কোথায় এলইডি।’’
প্রশ্নগুলি খোদ শাসক দলের কাউন্সিলরদের। দেড় বছর পার করেও আলোর সমস্যায় জেরবার বিধাননগর পুরসভা। অবশেষে একযোগে মুখ খুললেন কাউন্সিলরেরা। আর কার্যত তোপের মুখে মেয়র পারিষদেরা।
বৃহস্পতিবার বিধাননগর পুরভবনে ছিল কাউন্সিলরদের বৈঠক। সেখানেই আলো নিয়ে তুমুল হইচই জুড়ে দেন তাঁরা। সূত্রের খবর, তাই নিয়ে রীতিমতো তোপের মুখে পড়েন মেয়র পারিষদ (আলো) সুধীর সাহা থেকে শুরু করে মেয়র সব্যসাচী দত্ত এবং অন্য পারিষদেরা।
পরে মেয়র বলেন, ‘‘কাউন্সিলরেরা আলো চাইছেন। ন্যায্য দাবি। কিন্তু কেউ কেউ উন্নয়নে শরিক হতে চাইছেন না। কার্যত বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের ভূমিকা পালন করছেন।’’ মেয়র পারিষদ (আলো) অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তবে মেয়রের যুক্তি মানতে নারাজ কাউন্সিলরেরা। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘একটি প্রকল্প নিয়ে দেড় বছর পেরিয়ে গেল। মানুষকে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে। কে কী প্রক্রিয়ায় আলোর কাজ পাবে, জানার দরকার নেই। আমাদের আলো চাই। দ্রুত।’’
কিন্তু কেন দেড় বছরেও আলোর ব্যবস্থা করা যায়নি? কাউন্সিলরদের একাংশের অভিযোগ, বিধাননগর পুর এলাকায় আলোর অবস্থা শোচনীয়। বাসিন্দারা অভিযোগ জানালেও কোনও পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না। অথচ একটি আলোর প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্প রূপায়ণ হলে সমস্যা মিটে যেত।
কেন হয়নি? পুরসভা সূত্রের খবর, দেড় বছর আগে দু’টি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল পুরসভা। তার মধ্যে ছিল ‘আলো আমার আলো’ এবং ‘আমার শহর’ নামের দুই প্রকল্প। দু’টি কাজেরই বরাত পায় একটি সংস্থা।
তার মধ্যে ‘আমার শহর’ প্রকল্পের মধ্যে দু’টি ভাগ রয়েছে। তার কাজও চলছে। কিন্তু কোনও ভাবেই ‘আলো আমার আলো’ প্রকল্পের কাজ চালু করা যায়নি। রাজারহাটের এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘দিনের পর দিন ওই আলোর প্রকল্প আটকে রয়েছে। হয় প্রকল্প বাতিল হোক কিংবা চালু করা হোক। আমরা আলো দিতে পারছি না। মানুষের কাছে জবাব দিতে হচ্ছে আমাদেরই।’’ তার সঙ্গে সুর মেলান সল্টলেকের অনেক কাউন্সিলররাই।
প্রকল্প কেন আটকে রয়েছে?
পুরসভা সূত্রের খবর, আলোর প্রকল্পে টেন্ডার প্রক্রিয়া এবং বরাত পাওয়া সংস্থাকে নিয়ে বেঁকে বসেন মেয়র পারিষদ (আলো)।
তাঁর অভিযোগ, তিনটি প্রকল্পের বরাত পেয়েছে নির্দিষ্ট একটি সংস্থা। পুরো প্রক্রিয়ায় অনেক অনিয়ম রয়েছে। ই টেন্ডার করা হয়নি। টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া থেকে বরাত দেওয়ার মধ্যে অনেক অনিয়ম রয়েছে। তিনি লিখিত ভাবে পুর প্রশাসন থেকে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে তাঁর প্রতিবাদ জানান। তার পরে এ দিনের বৈঠক। এখন বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা হয়নি। ফলে প্রকল্প রূপায়ণে সময় লাগছে। এর জন্য তিনি দায়ী নন বলেও এ দিনের বৈঠকেও দাবি করেছেন সেই মেয়র পারিষদ।
মেয়র পারিষদের যুক্তির পাল্টা যুক্তিও পেশ করেন অনেকে। কাউন্সিলরেরা এতে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তুমুল হইচই শুরু হয়। সূত্রের খবর, শেষে বৈঠকে চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে বিষয়টির অবিলম্বে মীমাংসা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ দিকে, এ দিন ভিআইপি রোডের ধারে একটি কলোনিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ সংস্থা বিদ্যুতের সংযোগ দেয়। হাজির ছিলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, তাঁদের সরকারের নীতি কেউ যেন অন্ধকারে না থাকে। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ওই কলোনির মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy