দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় ফের জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। মঙ্গলবার রাতে বাগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রঞ্জিতা মণ্ডল (৪০) নামে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তিনি দক্ষিণ দমদমের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের এম সি গার্ডেন এলাকায় থাকতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রঞ্জিতা জ্বরে আক্রান্ত হন রবিবার।
রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি এনএস-১ পজিটিভ ধরা পড়ে বলে পরিবারের দাবি। চিকিৎসকের পরামর্শে বাগবাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাতে সেখানেই রঞ্জিতার মৃত্যু হয়। দক্ষিণ দমদম পুরসভা অবশ্য ডেঙ্গিতে মৃত্যুর কথা মানতে চায়নি। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, এলাইজা পরীক্ষায় জীবাণু ধরা পড়লে তবেই ডেঙ্গির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এনএস-১ পজিটিভ হলে তা ডেঙ্গি বলে মানবে না পুরসভা। চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কী কারণে মহিলার মৃত্যু হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১২, ১৩ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডকে উপদ্রুত হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু, যে এলাকায় রঞ্জিতার বাড়ি, সেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের এম সি গার্ডেন এলাকার কোনও উন্নতি হয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। ওই এলাকায় একাধিক ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের শরীরে ডেঙ্গির উপসর্গ মিলেছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
১৪ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পুরসভার চেয়ারম্যানও। তিনি জানান, অধিকাংশ এলাকাই মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। পুর প্রশাসনের বক্তব্য, ওই এলাকায় বহু বাড়িতে কুয়ো রয়েছে। পুরসভা বারবার অভিযান চালালেও এখনও বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা ফেরেনি।
তবে, শুধু ওই তিনটি ওয়ার্ডেই নয়, পুরসভা সূত্রে খবর, আরও কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে জ্বরে আক্রান্তের খবর আসছে।
এর আগে দমদমের মধুগড় এলাকায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছিল। পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা দেখেন, গোটা এলাকাই মশার আঁতুড়ঘর। এর পরে নড়েচড়ে বসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। দফায় দফায় পুর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলাতে পরিকল্পনা তৈরি হয়। জেলা প্রশাসনের এক প্রতিনিধিও নিয়মিত দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় মশা মারার কাজের তদারকি করছেন। পথে নামতে হয়েছে চেয়ারম্যান থেকে কাউন্সিলরদের।
পরপর দু’দিন সরকারি অফিস, কলেজ ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে মশার লার্ভা মেলায় উদ্বেগ বেড়েছে বিধাননগরে। ওই সব এলাকায় কেন আগে অভিযান চালানো হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ের দাবি, এ বছর গোড়া থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জুন মাস পর্যন্ত তেমন ভাবে মশার প্রকোপ বাড়েনি। কিন্তু জুন মাসের শেষ থেকে ১৫ দিনে বৃষ্টিতে ছবিটা কিছুটা বদলেছে। মেয়র পারিষদের আশ্বাস, ‘‘আতঙ্কের কিছু নেই। প্রতিটি ওয়ার্ডে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিয়মিত ভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে।’’
আজ, বৃহস্পতিবার ফের বিধাননগর পুরসভা এলাকায় নির্দিষ্ট সরকারি ভবনে অভিযান চালানো হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। পুরসভা সূত্রে বলা হয়, বেশ কয়েকটি সরকারি ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে। তার সব ক’টিতেই অভিযান হবে।