Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Covid-19

করোনার সঙ্গে হাজির ডেঙ্গিও, মৃত্যু দু’জনের

তিলজলার বাসিন্দা মৃত বালকের নাম ফয়জান আহমেদ। সোমবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে পার্ক সার্কাসের এক শিশু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ০৩:২৭
Share: Save:

এক দিকে কোভিড-১৯ যখন মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, তখনই উদ্বেগের মাত্রা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দু’টি প্রাণ কেড়ে নিল ডেঙ্গি। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার ১২ বছরের এক বালক ও ১৭ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গি ও করোনার এই জোড়া হামলা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন নবান্নে বলেন, ‘‘জুলাই-অগস্ট মাসে কোভিড পিকে থাকবে। বর্ষা শুরু হয়েছে। তাই ডেঙ্গিকেও অবহেলা করবেন না। জল জমতে দেবেন না, এলাকা পরিষ্কার রাখবেন।’’

তিলজলার বাসিন্দা মৃত বালকের নাম ফয়জান আহমেদ। সোমবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে পার্ক সার্কাসের এক শিশু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি জানান, সঙ্কটজনক অবস্থাতেই ফয়জানকে আনা হয়। ডেঙ্গির উপসর্গ থাকায় রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। তার এনএস-১ নেগেটিভ এলেও আইজিএম, আইজিজি পজ়িটিভ এসেছে। এ দিন মৃতের বাবা ফোনে কিছু বলতে চাননি। ফয়জানের এক দাদা ফোন ধরে শুধু জানান, ওই বালকের জ্বর ছিল না। কোভিড পরিস্থিতিতে জ্বরের উপসর্গের কথা যে অনেকেই গোপন করছেন, তা স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছেন পুরসভার চিকিৎসকদের একাংশ। এ ক্ষেত্রেও জ্বর গোপন করার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, তিলজলার ঘটনার আগে গত সপ্তাহে আরও এক ডেঙ্গি-আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটি মতামত দিলে তবেই জানা যাবে, সত্যিই ডেঙ্গির কারণে ফয়জানের মৃত্যু হয়েছে কি না।

অন্য দিকে, হাওড়ায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের। তার নাম সায়ন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় (১৭)। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে শেষে মধ্য হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গত শনিবার ভর্তি করা হয় ওই কিশোরকে। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে জানা যায়, তার ডেঙ্গি হয়েছে। এর পরে রবিবার সকালে সায়ন্তন মারা যায়। ওই হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে তার মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সায়ন্তনের পরিবার সূত্রের খবর, দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রের বাড়ি উত্তর হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার কিংস রোডে। কিন্তু সে সালকিয়ার গোপাল পাইন লেনে ঠাকুরমার বাড়িতে থাকত। গত মঙ্গলবার তার জ্বর আসে। তাই সে নিজের বাড়িতে চলে যায়।

আরও পড়ুন: সামনের মাসে লকডাউনেও বন্ধ শহরের উড়ান

ওই ছাত্রের কাকা সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানোর পরে বুধবার তিনি টাইফয়েড ও ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করান। রিপোর্টে কিছু না মেলায় চিকিৎসক সাধারণ জ্বরের ওষুধ দেন। কিন্তু তত দিনে সায়ন্তনের খিদে-তেষ্টা কমে গিয়েছে। শুক্রবার তাকে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তি না নেওয়ায় আন্দুল রোডের একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শয্যা না থাকায় সায়ন্তনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ দিকে, হাওড়ায় প্রথম ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর পেয়েও জেলা স্বাস্থ্য দফতর বা পুরসভার কেউ খোঁজ নিতে আসেননি বলে অভিযোগ। হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।

আরও পড়ুন: করোনা রোগীর অ্যাম্বুল্যান্স আসতে ২৪ ঘণ্টা পার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE