বর্ষা শুরু হতেই জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও বাড়ছে ডেঙ্গির দাপট। গত বছরের মতো এ বারেও উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। গত বছর ১২ নম্বর বরো এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে বহু মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত, কেবল ১২ নম্বর বরোতেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ জন। যার মধ্যে কেবল জুলাই মাসেই সংক্রমিত ২৬ জন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার ৯, ১০ ও ১১ নম্বর বরো এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও জুলাই মাসে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি, উত্তর কলকাতার এক নম্বর বরো নিয়েও চিন্তায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা।
পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন এলাকায় টায়ারের দোকান রয়েছে। সেই সমস্ত অধিকাংশ দোকানেই দেখা গিয়েছে, বাইরে রাখা টায়ারে জল জমে আছে। যার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা। এক নম্বর বরো এলাকার একাধিক ওয়ার্ড ছাড়াও মধ্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর টায়ারের দোকান আছে। পুর
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, এক নম্বর বরোর একাধিক ওয়ার্ডে টায়ারের দোকানে মশার লার্ভা মিলেছে। পুরসভা ওই সমস্ত দোকানে নোটিস পাঠিয়েছে।
পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘টায়ারের দোকানগুলিতে একাধিক বার নোটিস পাঠিয়েও কোনও কাজ হয়নি। আমরা শীঘ্রই ওই সমস্ত দোকানের মালিকদের বিরুদ্ধে পুর আদালতে মামলা করব।’’ পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, গত বছরের জুলাই মাসে ১২ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২২। এ বার তা ২৬। পুর চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, গত বছরের অগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শহরের দক্ষিণ অংশে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েছিল। গত বছর অগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে ১২ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫৬০, ১৯৪৫, ১৮৭০ ও ১০১৯। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আগামী চার মাস আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি। গত বছরের মতো এ বারেও উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ডেঙ্গি দমনে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে আমরা বার বার অনুরোধ করছি। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষের উদাসীনতার জন্যই মশাবাহিত রোগের রমরমা।’’
দক্ষিণ কলকাতায় ফাঁকা জমি, তালাবন্ধ বাড়ি, অব্যবহৃত পুকুরের উপরে বেশি করে নজর রাখছে পুরসভা। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই সমস্ত জায়গায় আবর্জনা জমে তা মশার প্রজননকেন্দ্র হয়ে ওঠে। গত বছরের থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার পুরসভা ওই এলাকাগুলি পরিষ্কার করায় জোর দিচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)