বাড়ির পিছন দিকে জেনারেটর। সেখানে জল জমে। কোথাও বাড়ির পিছনে জঞ্জালের স্তূপ। সেখানেই মিলল ডেঙ্গির জীবাণু। সোমবার বিধাননগরের সিডি ব্লকে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক বাড়িতে এই ছবি। যা প্রমাণ করছে, এখনও হুঁশ ফেরেনি মানুষের। বিধাননগর থেকে দমদম জুড়ে একই চেহারা।
পুরসভা সূত্রের দাবি, পুর-কর্মীরা মোবাইলে ছবি তুলে পাঠাচ্ছেন কাউন্সিলর ও বিভাগীয় আধিকারিকদের। তার ভিত্তিতেই যাচ্ছেন কাউন্সিলরেরা। এ ছাড়াও দোকান, শপিং মলের ছাদে এসি থেকে পড়া জল জমে। তাই ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মল, বাজার সমিতিগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ, এখনও কিছু মলের ছাদ ও একাধিক জায়গায় জল জমে। যা পুর-নজরদারির আওতার বাইরে। বিধাননগরের এক পুরকর্তা জানান, মল ও বাজারে হানা দিয়ে জীবাণু না মিললেও জল যাতে না জমে, সে দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। মলগুলির কর্তৃপক্ষের একাংশের বক্তব্য, তাঁরা নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণ ও জল পরিশোধন করেন। জমা জলও নিয়মিত সরানোর ব্যবস্থা হয়।
আবর্জনার স্তূপে ডাবের খোলা, থার্মোকলের বাটি-গ্লাসে জমা জলেও বিপদের ইঙ্গিত। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয় না। তা অস্বীকার করেছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।
পুরসভার চিন্তা বাড়াচ্ছে সংযুক্ত এলাকাও। সেখানে বহু জায়গায় এক দিকে খাল, অন্য দিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ইতিমধ্যেই বিধাননগরের দত্তাবাদকে অতি বিপদপ্রবণ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য দফতরকে রিপোর্ট দিয়েছে বিধাননগর পুরসভা। পর্যাপ্ত কর্মী বা পরিকাঠামোর অভাবে কাজের গতি মন্থর। ফলে মশা নিয়ন্ত্রণে দত্তাবাদ ও সংযুক্ত এলাকায় পিছিয়ে পুরসভা।
৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন্তীদেবী কলোনিতে রবিবার এক শিশুর মৃত্যুর পরে এ দিন যান মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়, স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর সর্দার প্রমুখ। পরে প্রণয়বাবু জানান, কলোনির কিছু জায়গায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংযুক্ত এলাকায়, বিশেষত খালপাড়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জোর দেওয়া হয়েছে জঞ্জাল সাফাইয়েও। পুরসভা সূত্রের দাবি, খালে জলপ্রবাহ বাড়ানো হচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে মোটরবোটও নামবে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা অবশ্য বহু আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল। সোমবার রবীন্দ্র ভবনে দমদমের ৫২টি স্কুলের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক আলোচনাসভা করে পুরসভা। চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) গোপা পাণ্ডে জানান, স্কুল পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি। স্কুলগুলিকে ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতনও করা হয়। সভায় উপস্থিত পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানান, ক্লাস চলাকালীন লিকুইডেটর চালু রাখতে হবে। প্রয়োজনে পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলই পরিচ্ছন্নতা-অভিযান করুক।
তবে পুরসভার উদ্দেশে পতঙ্গবিদের বক্তব্য, মানুষকে বোঝাতে হবে, কামানের ধোঁয়া ঘরে ১০-১৫ মিনিট থাকলে ঘরের ভিতরেই মশা মরে যাবে। কারণ খোলা দরজা-জানলা দিয়ে ডেঙ্গির মশা এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy