Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Cancer Patient

Cancer: হাল ছেড়ো না, নাচে বার্তা ক্যানসারজয়ী শিশুদের

ক্যানসারে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের পাশে দাঁড়াতে এমনই এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৪০
Share: Save:

দুরারোগ্য ব্যাধি কেড়ে নিয়েছে একটি পা। কিন্তু হাল ছাড়েনি অঞ্জলি রায়, প্রীতি কুয়েরি। শনিবার সন্ধ্যায় সায়েন্স সিটির মিনি অডিটোরিয়ামে এক পায়ের তালেই ওরা দেখাল— এ ভাবেও ফিরে আসা যায়!

ক্যানসারে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের পাশে দাঁড়াতে এমনই এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সেখানেই ক্যানসারজয়ী শিশু-কিশোরীরা বার্তা দিল— ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু’। আর সেই হাল না-ছাড়ার প্রচেষ্টায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হাজির ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী কৌশিকী চক্রবর্তী এবং অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা পার্থ সরকার জানান, প্রতি বছর দেশে ৫০ হাজার শিশু-কিশোর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। মূলত লিউকেমিয়া (রক্তের ক্যানসার) ও টিউমার— এই দুই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয় তারা। অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ চিকিৎসা অনেক সময়ে মাঝপথে বন্ধ করে দিতেও বাধ্য হয় বহু শিশুর পরিবার। ফলে অকালে হারিয়ে যায় অনেকে। যদিও সময়মতো চিকিৎসা হলে শিশুদের ক্যানসারে সাফল্যের হার ৯০ শতাংশ। আবার প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন ও সামাজিক সহযোগিতার অভাবে সুস্থ হয়ে ওঠা শিশু-কিশোরেরা অনেকেই সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পারে না। প্রায় ১০ বছর ধরে শিশু-কিশোরদের ক্যানসার নিয়ে কাজ করা পার্থবাবুর কথায়, “আমাদের সহমর্মিতা ওই সমস্ত শিশু-কিশোরদের জন্য। ১০০টি শিশুকে চিকিৎসায় সহায়তা দেওয়া এবং একই সঙ্গে ক্যানসারজয়ী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা ও জীবিকা উপার্জনে সাহায্য করাই মূল লক্ষ্য। চিকিৎসায় সহায়তা ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত সেই লক্ষ্যের প্রথম ধাপ হিসেবে এই অনুষ্ঠান।”

উন্নত দেশগুলিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যানসারজয়ী শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু এ দেশে হাতে গোনা দু’-একটি সংস্থা ছাড়া ক্যানসারজয়ী শিশুদের পুনর্বাসনের জন্য নির্দিষ্ট পরিকাঠামো নেই। ক্যানসার মানেই তীব্র আতঙ্ক ও শারীরিক যন্ত্রণার সঙ্গে লড়াই করতে হয় শিশুদের। তাই সেই মারণ রোগ জয়ের পরে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলেই মনে করেন এ নিয়ে কাজ করা অনেকে। তাঁদের মতে, ক্যানসার জয় করা একটি শিশুকে আঁধার থেকে আলোর পথে ফেরাতে যেমন অভিভাবকদের ভূমিকা রয়েছে, তেমনই দায়িত্ব রয়েছে শিশুটির পরিজন, প্রতিবেশী, বন্ধু, শিক্ষকদেরও। একই রকম ভাবে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ শিশু ক্যানসার পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রচেষ্টার কথাও জানিয়েছেন এই অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা।

ক্যানসারজয়ী শিশুদের নিয়ে কাজ করা অনেকেই তাই মনে করেন, সরকার থেকে সাধারণ মানুষের সদিচ্ছাই পারে আগামী প্রজন্মকে সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দিতে।

একই রকম ভাবে এই মারণ রোগকে হারিয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসার গল্পই অন্যদের শোনাতে বদ্ধপরিকর অঞ্জলি-প্রীতি-অনন্যা-সৌমিপর্ণারা। মারণ রোগ আক্রমণ করলেও তাকে পরাজিত করে যে জীবনের চেনা ছন্দে আবার ফিরে আসা যায়, এ দিন তা আরও এক বার প্রমাণ করল তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE