প্রতীকী ছবি।
তিন দিন আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বেলঘরিয়ার এক বালিকার। আর তার পরেই সেই এলাকায় ডেঙ্গির মশার আঁতুড়ঘর খুঁজতে ড্রোন নিয়ে পথে নামল কামারহাটি পুরসভা। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত বেলঘরিয়ার ওই এলাকায় চলল সমীক্ষা।
গত মঙ্গলবার কামারহাটি পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে আরশিয়ানা পারভিন নামে ১২ বছরের এক বালিকা কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। টেক্সম্যাকো এলাকার শ্রমিক কলোনির বাসিন্দা আরশিয়ানার মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয় ‘ডেঙ্গি হেমারেজিক শক’। ওই ঘটনার পরে এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথা মেনে নিয়েছিল কামারহাটি পুর কর্তৃপক্ষের একাংশ। স্থানীয় কাউন্সিলর রূপালি সরকার, চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) বিমল সাহা এই বেহাল অবস্থার জন্য টেক্সম্যাকো কোম্পানির উদাসীনতাকেই দায়ী করেছিলেন। যদিও টেক্সম্যাকো দায় অস্বীকার করে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা পুরসভার কাজ বলে আগেই দাবি করেছিল।
কাউন্সিলর রূপালি সরকার বলেন, ‘‘গোটা এলাকার মধ্যে শুধু টেক্সম্যাকো শ্রমিক কলোনির বাসিন্দারাই জ্বরে আক্রান্ত। প্রায় ১৫ জন কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।’’ বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে ওই সব রোগীদের অবস্থার খোঁজ নেন প্রাক্তন বিধায়ক মদন মিত্র, পুর চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। এরপরেই এ দিন সকাল থেকে ওই এলাকায় ডেঙ্গির মশার আস্তানা খুঁজতে ওড়ানো হয় ড্রোন। পুরসভা সূত্রের খবর, গোটা পুর এলাকার মধ্যে ৮, ২৯ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্ত বাসিন্দা রয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি ২৯ নম্বর ওয়ার্ডেই।
বিমলবাবু জানান, এ দিন সকালে ওই এলাকার ত্রিভাষা স্কুলের সামনে থাকা ওয়ার্ড অফিসের ছাদ থেকে ড্রোন ওড়ানো হয়। প্রায় ৪৫০ মিটার উচ্চতায় একটানা ২০ মিনিট করে উড়ে বাড়ি, আবাসন, কারখানার চিত্র তুলে আনে ওই ড্রোন। তিনি বলেন, ‘‘জিপিএস ব্যবস্থায় হোল্ডিং নম্বর সহ বর্তমান অবস্থার স্টিল ও ভিডিও ছবি আমাদের হাতে আসছে। এ বার সেই ছবি দিয়েই নোটিশ পাঠানো হবে। তাহলে সেই বাড়ির বাসিন্দা নিজেই বুঝতে পারবেন কোথায় সমস্যাটা রয়েছে।’’
রূপালির অভিযোগ, সব থেকে বেশি সমস্যার ছবি উঠে আসছে টেক্সম্যাকো শ্রমিক কলোনির ভিতরের এলাকা থেকে। কোথাও নিকাশি নালা উপচে জলে ভাসছে বাড়ির উঠোন, রাস্তা। কোথাও আবার দীর্ঘ দিন সাফাই না হওয়ায় আগাছার জঙ্গল তৈরি হয়েছে।
তাঁর কথায়, ‘‘এ বার তো ছবি দিয়ে প্রমাণ দিয়ে দিচ্ছি, আর নিশ্চয় টেক্সম্যাকো সংস্থা অভিযোগ অস্বীকার করবেন না।’’ অন্যদিকে বিমলবাবু জানান, টেক্সম্যাকো ছাড়াও এলাকার কয়েকটি বাড়ি, আবাসনের ছাদের টবে বা অন্য কিছুতে জল জমে থাকার ছবিও মিলেছে। কয়েকটি বন্ধ বাড়িতেও সেই সমস্যা রয়েছে।তবে শুধু ২৯ নম্বর ওয়ার্ডই নয়। পুজোর মরসুমে গোটা কামারহাটিতে ডেঙ্গির আস্তানা খুঁজতে নামবে ড্রোন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy