দক্ষিণ দমদমের বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই জমে আবর্জনা। —ফাইল চিত্র।
গত বছরের মতো চলতি বছরেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েকশো মানুষ। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। দক্ষিণ দমদম পুরসভার মতে, এর অন্যতম কারণ প্লাস্টিক ও থার্মোকল। এই দুইয়ের চাপে অবরুদ্ধ নিকাশির জন্য অল্প বৃষ্টিতেই বহু জায়গায় জল জমছে। প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাপ, থার্মোকলের বাটিতে জমা জলেও মিলেছে মশার লার্ভা।
এ বার তাই প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, দক্ষিণ দমদম পুর এলাকাকে প্লাস্টিক মুক্ত করাই এখন তাঁদের কাছে চ্যালেঞ্জ। এ জন্য বিশেষ পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কার্যকর করতে স্থানীয় ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং বাসিন্দাদের যুক্ত করা হবে। বিশেষ ভূমিকা নেবে পুলিশও। তাঁদের সঙ্গে নিয়েই অভিযান চালাবে পুরসভা। প্রয়োজনে আইনানুগ পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। মঙ্গলবার দক্ষিণ দমদম পুরসভায় কাউন্সিলরদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কাপড়, চট বা নাইলনের থলি হাতে বাজারে যাওয়ার ছবিটা এখন লুপ্ত। সেই জায়গায় জাঁকিয়ে বসেছে প্লাস্টিক। যত্রতত্র ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের ব্যাগ-কাপ, থার্মোকলের বাটি প্রভৃতি নিকাশির সব থেকে বড় শত্রু। এ তথ্য সামনে আসার পরে প্রতি বছর বানভাসি হওয়া বাঙুর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে।
বাঙুরের দেখানো পথে হেঁটে পরবর্তীকালে প্লাস্টিকের ব্যবহারে রাশ টেনেছে দমদম পার্ক। নিজের দু’টি এলাকা থেকে পাঠ নিয়ে প্লাস্টিক বন্ধের অভিযান শুরু করেছিল দক্ষিণ দমদম পুরসভাও। ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাপড়ের ব্যাগেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু হুঁশ ফেরেনি কারও।
পুরকর্তাদের মতে, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েও এ বছর রোগের প্রকোপ বেড়েছে। রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে মূলত ছিল প্লাস্টিক বন্ধ করার ডাক। তাতে সাড়া মেলেনি। এ বার তাই জনমত গঠনের পাশাপাশি অভিযানও চালানো হবে দোকান-বাজারে। প্রশাসনের মতে, বছরভর নিকাশিনালা এবং খাল সাফাইয়ের মূল বর্জ্যই থাকে প্লাস্টিক। যা তুলতে খরচ হয় লক্ষাধিক টাকা। আরও বড় সমস্যা, বাতিল প্লাস্টিকের জিনিসে জল জমে মশার বংশ বিস্তারে বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব।
গোটা দক্ষিণ দমদম পুরসভায় প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে কোথায় সমস্যা? কর্তৃপক্ষের মতে, এত দিন যা হয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবে। এ বার ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান জানান, পুর এলাকাকে প্লাস্টিক মুক্ত করতেই হবে। এ জন্যে বাজার-দোকান এবং স্থানীয় স্তরে জনমত তৈরি করা হবে। পুলিশকে নিয়ে অভিযান চালাতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy