স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশের অপেক্ষায় নয়, কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগেই স্কুলের পরিবেশ এবং সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব। কলকাতার বাছাই করা কিছু স্কুলের কাজের মান তুলে ধরে শহরের সব স্কুলকে উজ্জীবিত করতে চাইছে কলকাতা জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ও পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নয়নে শহরের ৫৬৩টি স্কুলকেই বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিছু স্কুল সে কাজ করছে। তবে দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি স্কুল সেই নির্দেশের বাইরেও নিজেদের উদ্যোগে বহু উন্নয়নের কাজ করেছে। এই প্রবণতা সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চায় শিক্ষা দফতর।
দফতরের এক কর্তা জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা স্তরের আধিকারিকরা বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করেন। ঠিক হয়েছে, যে সব স্কুল কর্তৃপক্ষ ভাল কাজ করেছেন, তাঁদের ছবি ও তথ্য রেখে দেওয়া হবে। দৃষ্টান্ত হিসাবে তা অন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরা হবে।
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, বইয়ের বাইরে বেরিয়ে সমাজ থেকে শিক্ষা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছিল দফতর। যেমন, চ়ড়ুই পাখি সংরক্ষণ, নিজের এলাকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে পড়ুয়াদের কাজে লাগাতে বলেছিল দফতর। স্কুল শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস বয়েজ স্কুল, যাদবপুর বিদ্যাপীঠ, যোধপুর পার্ক-সহ কিছু স্কুল ভাল কাজ করেছে। নুটবিহারী বয়েজ স্কুলের কর্তৃপক্ষ তো নিজ উদ্যোগে একাধিক কাজ করছেন।
উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার অন্য স্কুলেও নানা কর্মসূচি নিতে দেখা যাচ্ছে। কোথাও দূষণ নিয়ন্ত্রণে গোটা সমাজকে সচেতন করছেন ছাত্রছাত্রীরা, কোথাও আবার অভিভাবকদের প্রযুক্তি সম্পর্কে বোঝাচ্ছেন পড়ুয়ারা। পাশাপাশি সবুজায়ন, এলাকার সমস্যা খুঁজে বার করে তার সমাধানের পথ বেছে নেওয়ার মতো গুরুদায়িত্বও পালন করছে স্কুলপড়ুয়ারা। ওই কর্তা জানান, প্রথমে দফতরের নির্দেশ মেনেছে এমন স্কুলগুলির তালিকা তৈরি করা হবে। পরে তা স্কুলে স্কুলে প্রচারের কাজে লাগানো হবে।
নুটবিহারী দাস বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সংঘমিত্রা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা চাই, সমাজের সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজে ছাত্রছাত্রীরা যুক্ত হোক। সে জন্য পড়ার বাইরেও আমরা নানা কাজ করে থাকি। এই এলাকায় দূষণ বড় সমস্যা। তাই পড়ুয়াদের মাধ্যমে গোটা সমাজকে এ কাজে যুক্ত করতে চাই।’’ যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা কর্তব্য করে যাই। তাতে সবাই উপকৃত হলে ভাল লাগে।’’
‘‘পঠনপাঠনের বাইরেও সমাজের উন্নয়নে স্কুলের কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়াদের যৌথ প্রয়াস সর্বস্তরে হওয়া উচিত,’’ বলেন বিকাশ ভবনের এক কর্তা।