আদর: জন্মদিনে পরিবারের সঙ্গে অন্নপূর্ণা খাঁ। রবিবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র
শতবর্ষেও রীতিমতো প্রাণবন্ত অন্নপূর্ণাদেবী। তাঁর স্মৃতিতে রবীন্দ্রনাথ আজও ভাস্বর। কবির শেষ বিদায়ের দিনে শোকমিছিলে পা মেলানোর কথা আজও স্পষ্ট মনে আছে তাঁর। রবীন্দ্রনাথ তাই এখনও বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা হাওড়ার নীলমণি মল্লিক লেনের বাসিন্দা অন্নর্পূণা খাঁয়ের।
রবিবার হাওড়ার কদমতলায় মহা ধুমধাম করে অন্নপূর্ণাদেবীর শততম জন্মদিন পালন করলেন পরিবারের লোকজন। স্থানীয় একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভাড়াবাড়িতে নাতি-নাতনি, সন্তানদের পাশে নিয়ে এ দিন কেক কাটলেন অন্নর্পূণাদেবী। ফুল, মালা, বেলুনে সাজানো ঘরে আয়োজন করা হয়েছিল গানবাজনার। ছিল খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও।
ঠাকুরমার জন্মদিন পালনের প্রধান উদ্যোক্তা ছোট নাতি শুভক্ষণ এ দিন বলেন, ‘‘এই মানুষটা পরিবারের অর্থসঙ্কটের দিনেও আমাদের জন্মদিন পালন করতে ভোলেননি। তাই তাঁর শতর্বষের জন্মদিন সাড়ম্বরে পালন করতে চেয়েছিলাম।’’
১৯১৭ সালে নদিয়ার রানাঘাটের জমিদার-সরকার চৌধুরী পরিবারে জন্ম অন্নর্পূণাদেবীর। মাত্র সাত বছর বয়সে মাকে হারান। এর পরে কলকাতায় বিডন স্ট্রিটে মাসির কাছে বড় হয়ে ওঠা। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে যাতায়াতও সেই তখন থেকেই। ১৫ বছর বয়সে বিয়ে। এর পরে শ্বশুরবাড়ির ভালমন্দের সঙ্গে ক্রমশ নিজেকে জড়িতে নেওয়া।
আজও পুরনো কথা বলতে গিয়ে সেই শৈশবের দিনগুলিতেই ফিরে যান অন্নপূর্ণাদেবী। ইংরেজদের আমল থেকে ১৯৩৭ সালে হাওড়া ব্রিজ তৈরি— এখনও সবই তাঁর স্মৃতিতে উজ্জ্বল। বয়সের ভারে এখন কথা বলতে একটু অসুবিধা হয় অন্নপূর্ণাদেবীর। তবু বলে চলেন, ‘‘সাহেবদের দেখেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অনেক দেখেছি। ওঁর চলে যাওয়ার দিন আমি মরদেহের পিছনে হেঁটেছিলাম।’’
কয়েক দিন আগে বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পেয়েছেন অন্নপূর্ণাদেবী। তাই এ দিন হুইলচেয়ারে বসেই কেক কেটেছেন। তাঁর পুত্রবধূ শুক্লা খাঁ বলেন, ‘‘মা পাঁচ মাস আগেও তিনতলার ঠাকুর ঘরে গিয়ে প্রতিদিন দু’ঘণ্টা করে পুজো করতেন। পাঁচ বছর আগে তিনি আমার ছেলের সঙ্গে কামাখ্যাও ঘুরে এসেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy