বছর ১৫ আগেও যেখানে কলকাতা শহরে ২০টির মতো রুটে ট্রাম ছুটত। এখন সেখানে রুটের সংখ্যা মাত্র দু’টি! টিমটিম করে চলছে টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ এবং গড়িয়াহাট-এসপ্লানেড রুট। শনিবার তাই জন্মদিন পালনের সঙ্গে উচ্চারিত হল রাজপথে ট্রামের অস্তিত্ব রক্ষার শপথ।
ট্রামকে বাঁচানোর আর্জি নিয়ে একাধিক সংগঠন ইতিমধ্যেই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়ে ট্রামকে বাঁচাতে কী কী পদক্ষেপ করা যায়, আদালত তা খুঁজে দেখতে বলেছে। এ দিন বিভিন্ন ট্রাম প্রেমী সংগঠন এবং পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের উদ্যোগে গড়িয়াহাট থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত বিশেষ ট্রাম যাত্রার আয়োজন হয়।
ট্রামের সার্ধশতবর্ষ পালনের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল গত বছর। ১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় প্রথম ট্রাম চলে। এ দিন সেই ঘটনার ১৫১ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। গড়িয়াহাট ট্রাম ডিপোয় জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ট্রাম এবং পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা ছাড়াও ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, অনীক দত্ত, চিত্রশিল্পী সমীর আইচ, গায়ক সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘একটি শহরের অতীতকে তার বর্তমান থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। ট্রাম পুরনো বলেই তাকে বাতিল করে দেওয়া যায় না।’’ অধ্যাপক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় মেঘে ঢাকা তারা ছবিতে ট্রামের তারের ছবির দৃশ্যকল্পের উল্লেখ করে বলেন, ‘‘শহরের মানুষের সুখদুঃখের সঙ্গী ট্রাম।’’
রাস্তা থেকে ট্রাম তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করেন সকলেই। ট্রামপ্রেমী সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ট্রাম তুলে দেওয়ার প্রয়াসের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ ছিল আজ।’’ এই ঐতিহ্য রক্ষার দাবিতে আগামী মাসে সংগঠনের সদস্যেরা ফের পথে নামছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)