Advertisement
E-Paper

একই বহুতলে কারখানা ও স্কুল, আগুনে আতঙ্ক

খুদে পড়ুয়ারা প্লে স্কুলে তখন প্রায় সকলেই হাজির। কারও বয়স দেড়, কারও বা পাঁচ ছুঁই ছুঁই। কেউ কেউ ততক্ষণে খেলতেও শুরু করেছে। কারও বা চলছে ছবি আঁকা এবং অক্ষর পরিচয়ের পাঠ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪০
ভয়ার্ত। —নিজস্ব চিত্র।

ভয়ার্ত। —নিজস্ব চিত্র।

খুদে পড়ুয়ারা প্লে স্কুলে তখন প্রায় সকলেই হাজির। কারও বয়স দেড়, কারও বা পাঁচ ছুঁই ছুঁই। কেউ কেউ ততক্ষণে খেলতেও শুরু করেছে। কারও বা চলছে ছবি আঁকা এবং অক্ষর পরিচয়ের পাঠ। হঠাৎ করেই চিৎকার শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শিক্ষিকারা। জানলা দিয়ে দেখতে পান আবাসন চত্বরে ধোঁয়া। যে আবাসনে আগুন লেগেছে, তারই দোতলায় তখন চলছে স্কুলটি। আগুন লেগেছে শুনে বাসিন্দাদেরও অনেকেই নীচে নেমে আসেন। চিৎকার শুরু করেন। ছুটে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। এর পরে শিক্ষিকাদের সঙ্গে তাঁরাও হাত লাগান খুদেদের দ্রুত নীচের দোকানে নামিয়ে এনে জড়ো করার কাজে। বুধবার এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডে।

দমকল সূত্রে খবর, ওই বহুতলের পাঁচতলার একটি ঘরে শাড়ি তৈরির কারখানায় আগুন লাগে। চারটি ইঞ্জিন আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কারখানার দু’জন কর্মী জখম হন। এক জনকে কাছেই একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান। বছর খানেক আগে এই কারখানেতেই এক জন কর্মী আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিলেন বলে জানান বাসিন্দারা।

এই প্লে স্কুলের অধ্যক্ষা সারিয়া কপূর বলেন, ‘‘এ দিন বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনা থেকে আমরা রক্ষা পেলাম। এই সময়ে আমাদের স্কুলে ১০ জন শিশু ছিল। চিৎকার শুনেই আমরা তাদের নামিয়ে নিরাপদ জায়গায় রাখি। পরে অভিভাবকদের ডেকে তাঁদের হাতে তুলে দিই পড়য়াদের।’’

রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের এই বহুতলটি অনেক পুরনো। এই বাড়িতে ঢোকা এবং বেরোনোর জন্য একটাই কাঠের সিঁড়ি। এই বাড়ির পাঁচতলায় একটি ঘরেই চলছে কাপড়ের এমব্রয়ডারি এবং নকশার কাজ। ঘরের এক দিকে ডাঁই করা থাকে কাপড়ের স্তূপ। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বড় আকার নিতে পারত বলে এক দমকল আধিকারিকের বক্তব্য।

এই কারখানার এক কর্মী বিনোদ সাউ বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ে আমরা কাজ করছিলাম। হঠাৎ করে পাশে রাখা ইলেকট্রিক মেশিন থেকে আগুন লাগে। আগুনে আমার হাত পুড়ে যায়। আমার পাশে এক সহকর্মীও আগুনে জখম হয়েছেন। প্রথমে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলাম। পরে দমকল আসে। বছর খানেক আগেও আগুন লেগে এক জনের মৃত্যু হয়েছিল।’’ বাসিন্দাদের অনেকেরেই অভিযোগ, এই ধরনের আবাসনে ঘরের মধ্যে কারখানা চলার ব্যাপারে মালিককে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা
নেওয়া হয়নি।

এমন আবাসনে কী করেই বা কাপড়ের কারখানার অনুমতি দেওয়া হয়? পুরসভা এবং পুলিশের মতে, এই কারখানার মালিককে ডাকা হয়েছে। তাঁর কোনও লাইসেন্স আছে কি না বা নির্দিষ্ট ভাবে কী হিসেবে লাইসেন্স নেওয়া ছিল, তা তদন্ত করে জানা যাবে। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, নির্দিষ্ট ভাবে এই শাড়ি কারখানার ব্যাপারে কোনও অভিযোগ ছিল কি না, তা জানা নেই। পুরসভার সেই পরিকাঠামো নেই যে লাইসেন্সের নিয়ম মেনে সর্বত্র কাজ হচ্ছে কি না, তা দেখবে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুরসভা।

Fire School Building
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy