Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ফের আগুন, এ বার গ্রন্থাগারে

বারবার তিন বার!কিন্তু তৃতীয় বারের বেলাতেও যে কোনও শিক্ষাই নেয়নি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, তা প্রমাণ হয়ে গেল শুক্রবার আগুন লাগার ঘটনায়। এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একতলায় ‘স্যুইচ রুমে’ আগুন লাগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪৯
Share: Save:

বারবার তিন বার!

কিন্তু তৃতীয় বারের বেলাতেও যে কোনও শিক্ষাই নেয়নি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, তা প্রমাণ হয়ে গেল শুক্রবার আগুন লাগার ঘটনায়। এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একতলায় ‘স্যুইচ রুমে’ আগুন লাগে। দমকলের চেষ্টায় কয়েক ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে সেই আগুন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ওই তলায় রয়েছে লাইব্রেরি, জার্নাল সার্চরুম এবং ওই স্যুইচ রুমটি। দুপুরে সেই ঘরটি থেকেই গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। তার পরেই খবর দেওয়া হয় দমকলে।

আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই অবশ্য দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন তা নিয়ন্ত্রণ করে। দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই ঘরে রয়েছে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, কম্পিউটার, ইউপিএস। সেই সমস্তই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং দমকলের তরফে মনে করা হচ্ছে, ওই ঘরের এসি মেশিন থেকেই শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লেগেছে। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছে ওই ঘরেরই লাগোয়া লাইব্রেরি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই ঘরে প্রায় ২ লক্ষ বই রয়েছে, যার মধ্যে আছে বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহও। গোটা ভবনই ভর্তি হয়ে যায় কালো ধোঁয়ায়। স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া অভীক হাজরা জানান, দোতলায় সবে বই খুলে পড়তে বসেছেন তাঁরা। হঠাৎই কানে আসে চেঁচামেচি, ভেসে আসে ধোঁয়ার গন্ধও। অভীক বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে বাইরে চলে আসি।’’

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলেন, ‘‘লাইব্রেরির কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে কী করে আগুন লাগল, তা তদন্ত করে দেখবে পিডব্লিউডি এবং দমকল বিভাগ।’’ এর আগে ২০১০ সালে বিধ্বংসী আগুন লেগে পুড়ে খাক হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের গবেষণাগার। ২০১৪ সালে আগুন লাগে বেকার গবেষণাগারে। গত বছরই আগুন লেগেছিল কলা বিভাগের ভবনে। দেবজ্যোতিবাবু জানান, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে নেই কোনও ফায়ার অ্যালার্ম, নেই স্মোক অ্যালার্মও। কেন তিন বারের ভয়ঙ্কর আগুন থেকেও শিক্ষা নেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ?

দেবজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘নভেম্বর মাসেই এই ভবনেও স্থায়ী অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা বসানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা তো যে কোনও সময়েই ঘটতে পারে।’’ তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি অগ্নি নির্বাপক থাকায় সেগুলির সাহায্যে দমকল আসার আগেই বেশ খানিকটা আগুনের মোকাবিলা করা গিয়েছে। ‘‘চার মাস আগেই আমাদের কর্মীদের অগ্নি-নির্বাপণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সে কারণইে এ দিন বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতি আটকানো গিয়েছে,’’ বলেন তিনি। তবে রেজিস্ট্রারের কথায় আশ্বস্ত হচ্ছেন না পড়ুয়াদের অনেকেই। প্রশ্ন তুলছেন, দু’শো বছর পার হওয়া একটি ঐতিহ্যশালী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারদিকে তাকালেই দেখা যায়, পুননির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু প্রাথমিক নিরাপত্তাই যে অপর্যাপ্ত। কীসের জন্য তবে এত তোড়জোড়? কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানাচ্ছেন, এটি নিছকই দুর্ঘটনা। অত্যাধুনিক ব্যবস্থা বসানোর আগেই তা ঘটে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fire library
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE