—প্রতীকী ছবি।
আগুনের উৎসস্থল ম্যানহোল। সেখান থেকেই সোজা পেট্রল পাম্পের দিকে ধেয়ে গেল আগুন। রবিবার সকালে যে দৃশ্য দেখে আতঙ্ক ছড়াতে সময় লাগেনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আতঙ্কের জেরে পেট্রল পাম্পে থাকা এক ব্যক্তি আগুনের উপর দিয়েই দ্রুত গতিতে বাইক চালিয়ে বেরিয়া যান! দমকলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পেট্রল পাম্পে সংস্কারের কাজ চলায় কাউকে জ্বালানি দেওয়া হচ্ছিল না। সেটাই রক্ষে।’’ জ্বালানি দেওয়া হলে দুর্ঘটনা বড় আকার নিত বলে অনুমান ওই দমকল আধিকারিকের।
নেতাজিনগরের ঘটনাস্থলে কলকাতা পুরসভার কুষ্ঠ নিবারণ কেন্দ্রের ফুটপাতে দু’টি ম্যানহোল রয়েছে। পুরসভার চিকিৎসা কেন্দ্রের পাশেই একটি পেট্রল পাম্প রয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ম্যানহোল থেকে আচমকা একটি বিকট শব্দ হয়। মুহূর্তে আগুনের শিখা ম্যানহোলের ডান দিক ধরে পেট্রল পাম্পের দিকে ধেয়ে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জ্বালানি স্টেশনের খানিকটা দূরেই বালি ফেলা রয়েছে। ওই জায়গায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থেকে স্প্রে করা রাসায়ণিকের চিহ্নও স্পষ্ট। আগুনের শিখা আরও কিছুটা এগোলে কী হত, তা ভেবে শিউরে উঠেছেন স্থানীয়েরা।
ঘটনাস্থলের উল্টো দিকের ফুটপাতে ট্যাক্সি, অটো, রিকশা এবং ৪১ নম্বর রুটের বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। ট্যাক্সিচালক কাশীনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘হাঁটু সমান আগুনের শিখা পেট্রল পাম্পের দিকে এগোচ্ছে দেখে আমরা সকলে বালি দিতে থাকি। পেট্রল পাম্পের কর্মীরা স্প্রে করা শুরু করেন। এরই মধ্যে এক জন বাইক আরোহী প্রাণভয়ে আগুনের মধ্যে দিয়ে বাইক চালিয়ে চলে যান। ঠিক সিনেমায় যেমন হয়।’’ আতঙ্কে অটো, বাস, রিকশাচালকেরা সব গাড়ি সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। স্থানীয় ব্যবসায়ী পিন্টু ঘোষ বলেন, ‘‘আমার দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল। ভয়ে দোকান ছেড়ে দৌড় লাগাই।’’
খবর পেয়ে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ঘন বসতি এলাকায় পেট্রল পাম্পের কাছে আরও সাবধনতা অবলম্বন করা যে প্রয়োজন, তা অস্বীকার করেননি দমকলের আধিকারিকেরা। পুলিশ জানিয়েছে, ম্যানহোলে তারে শর্ট সার্কিট থেকে কোনও ভাবে আগুন লেগেছে। কিন্তু আগুন পেট্রল পাম্পের দিকে কী ভাবে ধেয়ে গেল? এই প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। দমকলের আধিকারিকদের মতে, জ্বালানি দেওয়ার সময়ে পেট্রল পাম্পে ঢোকা-বেরোনোর পথে দাহ্য পদার্থ পড়ে থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দমকল সূত্রের খবর, নেতাজিনগরের পেট্রল পাম্পের তেলাধার রাস্তার দিকে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছেন দমকলের আধিকারিকেরা। পেট্রল যেহেতু সহজে দাহ্য, তাই কোনও ভাবে ম্যানহোলের আগুনের সংস্পর্শে চলে এসেছিল বলে অনুমান। পাশাপাশি, ম্যানহোলের ভিতরেও মোবিল জাতীয় কোনও রকম দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
এ দিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আগামিদিনে পেট্রল পাম্প চত্বরে দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে বলে দমকল সূত্রের খবর। পুলিশ জানিয়েছে, কী ভাবে পুরো ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy