Advertisement
০৭ মে ২০২৪
ফড়িয়াপুকুর

ডাঁই করা সিলিন্ডার ফেটে আগুন

আচমকা এলাকা ছাপিয়ে প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ। বাসিন্দারা দেখলেন, ‘আগুন, আগুন’ বলে গ্যারাজ থেকে ছুটে বেরিয়ে আসছেন কয়েক জন শ্রমিক। মুহূর্তে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়।

গলির মধ্যে এ ভাবেই স্তূপ করে রাখা সিলিন্ডার। বৃহস্পতিবার সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

গলির মধ্যে এ ভাবেই স্তূপ করে রাখা সিলিন্ডার। বৃহস্পতিবার সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৫১
Share: Save:

আচমকা এলাকা ছাপিয়ে প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ। বাসিন্দারা দেখলেন, ‘আগুন, আগুন’ বলে গ্যারাজ থেকে ছুটে বেরিয়ে আসছেন কয়েক জন শ্রমিক। মুহূর্তে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে দেখলেন, বিস্ফোরণ ঘটেছে ওই গ্যারাজে রাখা গ্যাস সিলিন্ডারে। তার জেরেই আগুন ধরে বিস্ফোরণ ঘটে গ্যারাজে থাকা দু’টি গাড়িতে। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে গ্যারাজের অ্যাসবেস্টসের চাল।

বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে ফড়িয়াপুকুরের কাছে যদু মিত্র লেনে। দমকল জানিয়েছে, ওই এলাকায় গাড়ির গ্যারাজ, লোহা ঝালাই-সহ বহু দোকান আছে। এ দিন কাজ চলাকালীন ওই গ্যারাজে রাখা সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে। এর পরেই প্রমাদ গোনেন স্থানীয়েরা। গ্যারাজের পাশেই একটি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানের গুদামে স্তূপীকৃত ছিল অক্সিজেন, নাইট্রোজেন এবং আর্গন গ্যাসের সিলিন্ডার। কিছু সিলিন্ডার রাখা ছিল ওই দোকান থেকে গ্যারাজে যাওয়ার পথে গলিতে। এ ছাড়াও ছিল রং, ভিনাইল-সহ দাহ্য পদার্থ। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে হাতে হাতে সিলিন্ডার বার করে রাস্তায় ফেলতে শুরু করেন। ততক্ষণে গ্যারাজের পিছনের বস্তিতে ধরে গিয়েছে আগুন। মুহূর্তে ভস্মীভূত হয়ে যায় গ্যারাজ-সহ ৮-৯টি ঝুপড়ি। কোনওক্রমে বাঁচেন ওই বস্তির বাসিন্দারা। আগুনে অসুস্থও হয়ে পড়েন অনেকে। গ্যারাজ-মালিক এবং এক মহিলা-সহ তিন জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাগর সাহা, লোকনাথ ঘোষের কথায়, ‘‘লোকজন চিৎকার করে ছুটে বেরোতেই মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটে। আমরাই চারদিক থেকে বালতি করে জল ঢেলে আগুন নেভাই।’’ তাঁদের অভিযোগ, সঙ্গে সঙ্গে দমকলকে জানানো সত্ত্বেও তারা আধ ঘণ্টারও বেশি দেরিতে এসেছে।

তবে ওই গ্যারাজের পিছনেই যে ভাবে কয়েকশো সিলিন্ডার ডাঁই করে রাখা ছিল, তাতে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা অনেকের। পুলিশ জানায়, ওই সিলিন্ডার হাসপাতাল, কারখানা-সহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হতো। গুদাম ছাড়া গ্যারাজের দিকে গলিতে ও গ্যারাজের মধ্যেও সিলিন্ডার রেখেছিলেন ওই দোকানের মালিক। ঘটনার পরে অবশ্য তিনি ফেরার।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ নস্যাৎ করে দমকলের উত্তর কলকাতার ডিভিশনাল অফিসার অভিজিৎ পাণ্ডে বলেন, ‘‘খবর পাওয়া মাত্রই দমকল এসেছে। পাঁচটি ইঞ্জিন ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।’’ দমকল সূত্রে খবর, ওই এলাকার বহু কারখানা ও দোকানে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থায় ক্রটি রয়েছে। সঠিক ট্রেড লাইসেন্স থাকলেও ওই ভাবে সরু গলিতে অত গ্যাস সিলিন্ডার দোকানের মালিক রাখতে পারেন না। ওই দোকানের ট্রেড লাইসেন্স খতিয়ে দেখবে দমকল। পাশাপাশি, খতিয়ে দেখা হবে গ্যারাজটির অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থাও।

এ দিন আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মানিকতলার বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রণতি ভট্টাচার্য-সহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন, পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের ক্ষতি পূরণের চেষ্টা করা হবে। ব্যস্ত সময়ে এই ঘটনার জেরে ওই এলাকায় সাময়িক যানজটও হয়।

অন্য দিকে, এ দিনই সকালে কালীঘাট থানা এলাকার হরিশ মুখার্জি রোডে একটি মোবাইলের দোকানে আগুন লাগে। দোকান খোলার আগেই ধোঁয়া দেখতে পান নিরাপত্তারক্ষীরা। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়। দমকলের অনুমান, এসি-র শর্ট সার্কিট থেকেই এই বিপত্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gas Cylinder Fariapukur police blast
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE