Advertisement
E-Paper

এটিএমের সুরক্ষায় কড়া নজর

উৎসবের মরসুম শেষ হয়েছে তো কী, এটিএমে নৈশ নজরদারি শিথিল করার বদলে আরও কঠোর করল লালবাজার। বহু দিন যাবৎ পুলিশের রাত পাহারার অবিচ্ছেদ্য অংশ এটিএম। নগদ টাকার উৎসস্থল বলে।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৯

উৎসবের মরসুম শেষ হয়েছে তো কী, এটিএমে নৈশ নজরদারি শিথিল করার বদলে আরও কঠোর করল লালবাজার।

বহু দিন যাবৎ পুলিশের রাত পাহারার অবিচ্ছেদ্য অংশ এটিএম। নগদ টাকার উৎসস্থল বলে। উৎসবের মরসুমে পাহারার মাত্রা আরও বাড়ে। শুরু হয় দুর্গাপুজো থেকে, চলে ছটপুজো পর্যন্ত। এ বছর মে মাসে শহরের দু’টি এটিএম থেকে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা লুঠ হওয়ার পরে এই শারদোৎসবে শহরের এটিএমগুলির উপরে নৈশ নজরদারি কঠোর করা হয়। প্রতিটি এলাকায় চলে মোটরসাইকেল ও ভ্যানে করে পুলিশের চক্কর ও উর্দিবিহীন গোয়েন্দাদের টহলদারি। ছটপুজোর পরে এই বাড়তি প্রহরা উঠিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উঠিয়ে নিতে ভরসা হয়নি পুলিশের।

সৌজন্যে সেই নোট কাণ্ড।

রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা, পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ পোশাকের গোয়েন্দারা টহল দিচ্ছেন এটিএমের আশপাশে। বৈধ নগদ টাকার সঙ্কটের জেরে মানুষের যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তাতে এটিএমে হামলা হতেই পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের একাংশের। তাই উৎসবের মরসুমে চালু হওয়া বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা চলছে এখনও।

শুক্রবার, ১১ নভেম্বরের কথা। টালিগঞ্জে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা লাগোয়া এটিএমে টাকা ঢোকে সওয়া সকাল ১০টায়, ১১টা বাজতে না বাজতেই শেষ। এক গ্রাহক নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন, ‘‘টাকা কিন্তু আছে, আপনি ইচ্ছাকৃত এটিএমের শাটার নামালেন কেন?’’ লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের একাংশও তাঁর কথা শুনে উত্তেজিত। উত্তাপ ক্রমে বাড়ছে দেখে ডাকা হয় পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কথায় ওই ব্যক্তিকে এটিএম বুথে নিয়ে গিয়ে দেখানো হয়, টাকা সত্যিই শেষ। পরে নিরাপত্তারক্ষী ব্যাঙ্কের এক অফিসারকে বলেন, ‘‘আমি শাটার নামিয়ে দিয়েছিলাম বলে রক্ষে। না হলে আজ এটিএম ভাঙচুর হতোই।’’

লালবাজারের কর্তাদের একাংশ ভয় পাচ্ছে, দিনেই যদি এমন হয়, রাতে কী হবে? তাঁদের বক্তব্য, দুষ্কৃতীদের দরকার নেই, সাধারণ মানুষই তো জরুরি প্রয়োজনে টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে এটিএমে ভাঙচুর করতে পারেন। আর দুষ্কৃতীরা যোগ দিলে টাকা হাপিস হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। তাঁদের মতে, দিনে তা-ও বহু লোক থাকে, কেউ খারাপ কিছু করতে গেলে অন্যেরা বাধা দিতে পারেন। কিন্তু রাতে যখন চারদিক ফাঁকা, তখন কী হবে? সে কথা মাথায় রেখেই এটিএমে চলছে নৈশ নজরদারি।

শুক্রবার কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘এটিএম বুথগুলি ও মেশিনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশ রাতে টহল দিচ্ছে। সেই সঙ্গে উর্দি ছাড়া, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বিভাগের বাহিনীও শহর জুড়ে নজরদারি চালাচ্ছেন।’’ ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দাপ্রধান বলছেন, ‘‘দুর্গাপুজোর আগেই এটা শুরু হয়েছিল। ছটপুজোর পরে তুলে নেওয়ার কথা ছিল। যেমনটা অন্য বার হয়। তবে নোটের সঙ্কট দেখা দেওয়ায় ওই কঠোর নজরদারি প্রত্যাহার করা হয়নি।’’

এক গোয়েন্দাকর্তার কথায়, ‘‘একটাই বাঁচোয়া, এখন রাত ১১টার মধ্যেই এটিএমে টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে। বেশি নোট দিতে পারছে না ব্যাঙ্ক। লুঠের আশঙ্কা তাই কম। অবশ্য বু‌থ ও মেশিনের যাতে ক্ষতি না হয়, সেটাও দেখতে হবে।’’ তবে কিছু এটিএমে টাকা বেশি তোলা হচ্ছে না, রাতভর সেগুলিতে মোটা টাকা পড়ে থাকছে। সেই সব এটিএমও পুলিশের কাছে দুশ্চিন্তার কারণ।

ATM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy