কলকাতা পুরসভার মডেলে কাজে গতি আনতে বরো অফিসগুলির অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা প্রায় আড়াই গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভা। পাশাপাশি, প্রতিটি বরোয় প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখার জন্য দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পদ সৃষ্টি করে সেই জায়গায় অবিলম্বে কর্মী নিয়োগের জন্য রাজ্যের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পুরসভায় গত মেয়র পরিষদের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, বরোগুলির আর্থিক ক্ষমতা প্রায় আড়াই গুণ বাড়ানো হবে। বরোগুলির অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা এত দিন ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে হবে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা। প্রতিটি ফাইলপিছু অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা ৩ লক্ষ থেকে বেড়ে হচ্ছে ৫ লক্ষ টাকা। আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি বরোয় দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পদ সৃষ্টি করে রাজ্য সরকারের কাছে শূন্যপদ পূরণের জন্য আবেদন জানিয়েছে হাওড়া পুরসভা। পুর কর্তাদের বক্তব্য, কলকাতা পুরসভার মডেলে বরোর অফিসগুলিকে সাজানো না হলে কাজে গতি আসবে না। তাই প্রতিটি বরোর জন্য এক জন এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনিক অফিসারের পদ সৃষ্টি করে উন্নয়নমূলক কাজ বরো অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
২০১৩ পুর নির্বাচনে তৃণমূল জয়ী হওয়ার পরেই ৫টি বরো থেকে ৭টি বরো তৈরি করা হয়। হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডের জন্য ৭টি বরো থাকলেও বালি পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ড হাওড়ার সঙ্গে সংযুক্ত করা হলেও সেখানে এত দিন কোনও বরো ছিল না। বালির মানুষকে আরও পরিষেবা দিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অবিলম্বে দু’টি জায়গা চিহ্নিত করে বরো অফিস তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। পুর নির্বাচন হলেই ওই বরোগুলির কাজ শুরু করা হবে।
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বালিতে ২টি বরো তৈরি হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার মডেলে বরোর আর্থিক ক্ষমতাও বাড়ানো হচ্ছে। কাজের গতি বাড়াতে দু’টি পদ সৃষ্টি করার প্রস্তাব ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’
ওই কর্তার মতে, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে অবিলম্বে কেএমডিএ বা সরকারি যে কোনও দফতর থেকে ডেপুটেশনে ওই দুই পদে লোক দিলে তবে বরোগুলির কাজ সামাল দেওয়া যাবে। কারণ, হাওড়া পুরসভার সদর দফতরের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। তাই একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়ে কার্যত নাজেহাল অবস্থা পুরকর্তাদের। অথচ হাতে রয়েছে হাওড়ায় স্পোর্টস সিটি তৈরি করার মতো প্রায় এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এই অবস্থায় গত কয়েক বছর ধরে পুরসভায় কোনও চিফ ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট নেই। খালি রয়েছে স্বাস্থ্য অফিসার বা কালেক্টরের মত পদও। ২০০৭ সালে সার্বিক ভাবে একটি শূন্যপদের তালিকা তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে সেই তালিকাই সংশোধন করে নিয়োগের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠাচ্ছে পুরসভা।
হাও়ড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বলেছে অবিলম্বে বরোগুলির জন্য পদ সৃষ্টি করে তা রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠাতে। কারণ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নিজে চান বরোগুলিকে কলকাতার মডেলে তৈরি করতে। এ ছাড়া আর কোন কোন পদে কর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন, সেই তালিকাও রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে।’’