বিক্ষোভে বাসিন্দারা। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র
সঙ্কট শুরু হয়েছিল চৈত্রের শেষ থেকেই। তখনই হাওড়া পুরসভার পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পাইপ লাইনে কমে গিয়েছিল জলের চাপ। ফলে বৈশাখ পড়তে না পড়তেই শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে শুরু হয়েছে পানীয় জলের তীব্র হাহাকার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সোমবার জলের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন দু’টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
আগামী সোমবার ভোট হাওড়ায়। তার ক’দিন আগেই জলের দাবিতে বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করায় কার্যত নড়েচড়ে বসেছেন তৃণমূল শাসিত পুরবোর্ডের কর্তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় এলাকার কাউন্সিলর ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের। তাঁরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
গ্রীষ্মে জলসঙ্কট হাওড়ায় নতুন কথা নয়। বিশেষত শহরের ২০টি ওয়ার্ডের কয়েকটি নির্দিষ্ট জায়াগায় প্রতি বছরই জলসঙ্কট দেখা দেয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা প্রতি বছর আশ্বাস দেয় সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। যেমন প্রতি বছর আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও গরম পড়তেই তীব্র জল সঙ্কটের মধ্যে পড়ে মধ্য হাওড়ার দেশপ্রাণ শাসমল রোড সংলগ্ন ২১ ও ২৩ নম্বর ওর্য়াড। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বর্ষায় এলাকার অলিগলিতে হাঁটু জল জমে আর গ্রীষ্মে পানীয় জলের জন্য হা-পিত্যেশ করে অপেক্ষা করে থাকতে হয়। বাসিন্দারা জানান, এ বারও গত ১০-১২দিন ধরে এলাকায় জল আসছিল না। রান্নার জল তো দূরের কথা, পানীয় জলও কিনে খেতে হচ্ছিল। এ নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল।
সোমবারও কলে জল না আসায় উত্তেজিত হয়ে পড়েন তাঁরা। গলায় ‘জল চাই, জল দিন’ লেখা পোস্টার ঝুলিয়ে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক চলে অবরোধ। যার জেরে ওই এলাকায় তীব্র যানজট হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ব্রতীন দাস ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। তাঁরা বাসিন্দাদের জানান, আপাতত পুরসভা ট্যাঙ্কে করে জল দেবে। মঙ্গলবারের মধ্যে যাতে জল পাওয়া যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই কথা শোনার পরে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। তবে জানিয়ে দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা না মিটলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
শহরে জলসঙ্কট নিয়ে মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গঙ্গায় জলস্তর কমে যাওয়ায় জল উপাদনে একটা সমস্যা হচ্ছে। তবে কয়েকটি এলাকায় জলসঙ্কট হচ্ছে মূলত আগের পুরবোর্ড অবৈজ্ঞানিক ভাবে পাইপলাইন পেতে যাওয়ায়।
এ সব পাইপলাইন পাল্টাতে হবে। ভোটের পর থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy