আগুন লাগলে জল নেওয়ার জন্য শহরের হাইড্রান্টই ছিল অন্যতম ভরসা। কিন্তু পলি পড়ে যাওয়ার ফলে হাইড্রান্ট নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে, প্রয়োজনে দমকলের ক্ষেত্রে জল নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সমস্যা মোকাবিলায় দমকল কলকাতা পুরসভার বুস্টিং পাম্পিং স্টেশনের সাহায্য ইতিমধ্যেই নিয়েছে। এছাড়াও যেখানে বুস্টিং পাম্পিং স্টেশনের অপ্রতুলতা রয়েছে সেখানে গভীর নলকূপ তৈরি করে জলের ঘাটতি মেটাতে ব্যবস্থা নিচ্ছে দমকল কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের দমকল মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, ‘‘ হাইড্রান্ট অনেক জায়গাতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অতীতে এখান থেকে জল নেওয়া হলেও বর্তমানে তা নেওয়া হয় না। পুরসভার বুস্টিং পাম্পিং স্টেশন থেকেই এখন জল নেওয়া হয়। এছাড়া সমস্যার সমাধানে সংযোজিত এলাকায় ৮৮ টি গভীর নলকূপ তৈরি করা হয়েছে।’’
শহরে হাইড্রান্ট তৈরি হয়েছিল কেন?
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ইংরেজ আমলেই শহরে গঙ্গার জল সরবরাহ করার জন্য গঙ্গার ধার ঘেঁষেই হাইড্রহান্ট বসানো হয়েছিল। শহরের রাস্তা ধেওয়া ছাড়াও নিকাশির প্রয়োজনে হাইড্রান্ট ব্যবহার করা হত। পরবর্তীকালে জলের নির্গমনের ফলে রাস্তা খারাপ এবং রাস্তা পিছল হওয়ায় পথ দুর্ঘটনা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় হাইড্রহান্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাইড্রান্ট ব্যবহৃত না হওয়ার জন্য ক্রমশ পলি পড়ে যাওয়ায় এগুলি নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও, হাইড্রান্টের গা ঘেঁষে গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে অনেকসময় হাইড্রান্ট ভেঙে যাওয়ায় এগুলি কোনও কাজেই আসে না। এই ড্রান্টগুলির বেশিরভাগই উত্তর এবং মধ্য কলকাতায় রয়েছে বলে পুরসভার নিকাশি দফতর থেকে জানানো হয়েছে।
রাজ্য দমকল দফতরের এক আধিকারিক জানান, কয়েকবছর আগে নন্দরাম মার্কেটে আগুন লাগার সময় হঠাৎ করেই জলের সমস্যা হয়েছিল। তখন হাইড্রান্ট থেকে জল নেওয়ার সময়ে দেখা যায় বড়বাজার অঞ্চলের হাইড্রান্ট শুকিয়ে গিয়েছে। তারপরেই কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য দমকল দফতর যৌথভাবে সমীক্ষা করার পরে দেখেন পলি পড়ে হাইড্রান্টগুলি শুকিয়ে গিয়েছে। তারপর ঠিক হয়, হাইড্রান্টের পলি পরিষ্কার করে সেগুলিকে ফের সচল করা হবে। কিন্তু সেগুলি আজ পর্যন্ত পরিষ্কার করা হয়নি।
এগুলি পরিষ্কার করা হল না কেন?
পুরকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, হাইড্রান্ট পরিষ্কার করা কার্যত অকোজো। আগে এই হাইড্রান্টের মধ্যে দিয়ে জল আসত। গঙ্গার সঙ্গে হাইড্রান্টের সংযোগ থাকায় এগুলির জোয়ার এবং ভাটার সময়ে স্বাভাবিক নিয়েমেই পরিষ্কার হয়ে যেত।
কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডাইরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন,‘‘হাইড্রান্টের মাধ্যমে জল সরবরাহ যবে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তখন থেকেই এগুলি অকেজো। দু’ একটি ঠিক থাকলেও থাকতে পারে। তবে দমকলের জলের জন্য হাইড্রান্টে-এর ব্যবহার এই মুহূর্তে দরকার হয় না। শহরের বুস্টার পাম্পিং স্টেশন থেকেই এখন জল নেওয়া হয়। কেথাও কোথাও গভীর নলকূপও তৈরি করা হয়েছে।’’
দমকলমন্ত্রী জানান, শহরে পুরসভার বুস্টার পাম্পিং স্টেশন ছাড়াও দমকল স্টেশনগুলির জলাধারের রাখা জলে আগুন নেভানো হয়। সংযোজিত এলাকা ছাড়াও কলকাতা পুরসভা এবং দমকল দফতরের তত্বাবধানে ২০টি বাজারের সামনে গভীর নলকূপ তৈরি করেছে। আরও কিছু বাজারের সমানে এই ধরণের গভীর নলকূপ করার পরিকল্পনা আছে বলেও দমকল মন্ত্রী জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy