E-Paper

নেতার ভয়েই কি লেক টাউন বেআইনি পার্কিংয়ের ‘মুক্তাঞ্চল’

বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ওই দাপুটে নেতার কারণেই এক বছর আগের ঘটনাটির পরে লেক টাউনে বেআইনি পার্কিং নিয়ে পুলিশ বিশেষ কড়াকড়ি করে না।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৮:২২
জবরদখল: ফুটপাত দখল করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে গাড়ি। লেক টাউনের বি ব্লকে।

জবরদখল: ফুটপাত দখল করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে গাড়ি। লেক টাউনের বি ব্লকে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।

বছরখানেক আগে লেক টাউনে বেআইনি ভাবে দাঁড় করানো একটি গাড়িতে কাঁটা লাগিয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, তার পরে গাড়ির মালিক ও তাঁর লোকজন চড়াও হন লেক টাউনের ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর ও কর্মীদের উপরে। কার্যত ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টরকে ঘর থেকে বার করে তাঁর ঘর দখল করে নেওয়া হয়। সেই বিশৃঙ্খলা কড়া হাতে দমন করতে চেয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিল বিধানগরের ট্র্যাফিক পুলিশ। কিন্তু লেক টাউনের এক দাপুটে নেতা পুলিশকে বাধ্য করেন অভিযুক্তদের সঙ্গে মিটমাট করে নিতে।

এক বছর পরেও সেই লেক টাউন যেন বেআইনি পার্কিংয়ের মুক্তাঞ্চল। যে যেখানে পারেন, রাস্তা বা ফুটপাত দখল করে গাড়ি রেখে দেন। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ওই দাপুটে নেতার কারণেই এক বছর আগের ঘটনাটির পরে লেক টাউনে বেআইনি পার্কিং নিয়ে পুলিশ বিশেষ কড়াকড়ি করে না। লেক টাউনে সম্প্রতি ঘোরাঘুরি করে দেখা গেল, বিভিন্ন জায়গায় ইচ্ছে মতো গাড়ি দাঁড় করানো রয়েছে। কোথাও কোথাও ফুটপাতের উপরে চেন দিয়ে ঘিরে গাড়ি রাখার জায়গাও তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ, যা দেখেও দেখে না প্রশাসন।

এ ভাবে বেআইনি পার্কিংয়ের অভিযোগ মূলত এসেছে বি ব্লক থেকে। এমনকি, পুলিশের ‘নো পার্কিং’ লেখা বোর্ডের সামনেও অবাধে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। গ্যারাজের অংশ বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার হওয়ায় অনেক বহুতলের গাড়ি দিনভর থাকে রাস্তাতেই। এ নিয়ে পথচারীদের অভিযোগ, ফুটপাতে গাড়ি রেখে দেওয়ায় রাস্তা দিয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এক প্রবীণ নাগরিকের কথায়, ‘‘লেক টাউনের ব্লক এলাকা এমনিতে ঘিঞ্জি নয়। কিন্তু যে ভাবে বাইক চলাচল করে, তাতে আমাদের মতো বাসিন্দাদের ফুটপাত ধরে হাঁটাই নিরাপদ। কিন্তু সেখানে তো যত্রতত্র গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে।’’

লেক টাউন এলাকার খবর, সেখানে সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় শাসকদলের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে। তার মধ্যে পুলিশকর্মীদের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগও রয়েছে। এক চায়ের দোকানির অভিযোগ, ‘‘আমার দোকান থেকে তোলাবাজির টাকা নিয়ে দরাদরি চলছিল। আচমকা দোকানের সামনে গাড়ি দাঁড় করানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ রাস্তার অন্যান্য এলাকায় ইচ্ছে মতো গাড়ি পার্কিং করা হচ্ছে। পুলিশ দেখেও দেখে না। অথচ আমার দোকানের সামনে ছ’-সাত জন করে পুলিশ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।’’

এ নিয়ে বিধাননগর কমিশনারেটের ট্র্যাফিক বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের নো পার্কিং বোর্ড থাকা সত্ত্বেও সেখানে পার্কিং করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী হয়েছে খতিয়ে দেখা হবে। এমন হওয়া ঠিক নয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Parking lake town

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy