স্কুল প্রাঙ্গণে শিবনাথ। নিজস্ব
স্নান করে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাক্টরে চাপা পড়ে গুরুতর জখম হয়েছিল হুগলির মৌরিগুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা, শ্রমিক গোরাচাঁদ টুডুর বড় ছেলে শিবনাথ। গত বছরই আর জি কর হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে দীর্ঘ দিন চিকিৎসার পরে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছিল বছর এগারোর সেই বালক। কিন্তু পড়াশোনায় উৎসাহী ছেলেটির খরচ এবং দূরত্বের কারণে স্কুলে পড়া নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সে খবর শুনে এগিয়ে এলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর এলাকার কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক চন্দন মাইতি। নিখরচায় ছেলেটিকে আবাসিক ছাত্র হিসেবে পড়াবে ওই স্কুল।
আপ্লুত বালকটির পরিবার। বাবা গোরাচাঁদ বলছেন, ‘‘ওই দুর্ঘটনার পরে ভাবিনি ছেলেটাকে আগের মতোই সুস্থ ভাবে দেখতে পারব। সেই সময়ে প্রতিটি দিন আতঙ্কে কাটিয়েছি। নতুন বছরে মাস্টারমশাইয়ের থেকে এমন খবর শুনে অবাক হয়ে যাই। প্রথমে মনে হয়েছিল কেউ মজা করছে।’’ পরিবার সূত্রের খবর, গ্রামের স্কুলে শিবনাথ বরাবর ভাল ফল করত। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে ভেবে কান্নাকাটি করছিল বালকটি। কিন্তু এত বড় বিপদের পরে ছেলেকে ওই পথে একা ছাড়তে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল পরিবার, সেই সঙ্গে ছিল টাকার অভাব।
দুর্ঘটনার পরে হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে যখন নিয়ে আসা হয়েছিল শিবনাথকে, তখন প্রায় সংজ্ঞাহীন ছিল সে। পরীক্ষার পরে জানা গিয়েছিল, অন্ত্র ফুটো হয়ে গিয়েছে তার। দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হলেও কোমায় চলে যায় বালকটি। এর পরে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রেখে মাস দুয়েক চিকিৎসায় সুস্থ হয় সে।
সম্প্রতি সেই খবর প্রকাশিত হয়। যা পড়ে নিজে থেকেই বালকটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক। সম্প্রতি সেই স্কুলে ভর্তি হয়ে ক্লাস করছে শিবনাথ।
চন্দনবাবু বলছেন, ‘‘এমন ছাত্রদের পাশে থেকে তাদের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের উদ্দেশ্য। বরাবরই বহু সামাজিক কাজ করে এই স্কুল।’’ তিনি জানান, স্বাধীনতার বছরে নেতাজির জন্মদিনে সেই শপথেই শুরু হয়েছিল স্কুলটির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy