Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দরজার ফাঁক দিয়ে গলে যেত কয়েক লক্ষ ডলার

অভিনব উপায়ে বিমানবন্দরের কাচের দরজার ফাঁক দিয়ে ডলার পাচার করছিলেন তাঁরা। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে। এমনই এক চক্রের তিন সদস্যকে রবিবার গ্রেফতার করেছে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)।

চিচিং ফাঁক: বিমানবন্দরের এই দরজার ফাঁক গলেই চলত পাচার। (ইনসেটে) উদ্ধার হওয়া ডলার। নিজস্ব চিত্র

চিচিং ফাঁক: বিমানবন্দরের এই দরজার ফাঁক গলেই চলত পাচার। (ইনসেটে) উদ্ধার হওয়া ডলার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৫৫
Share: Save:

অভিনব উপায়ে বিমানবন্দরের কাচের দরজার ফাঁক দিয়ে ডলার পাচার করছিলেন তাঁরা। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে। এমনই এক চক্রের তিন সদস্যকে রবিবার গ্রেফতার করেছে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার দাম প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা। ডিআরআই কর্তারা জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে যে সোনা ও মাদক পাচার হয়ে ভারতে ঢুকছে, এই টাকা মূলত সেই সোনা ও মাদক বিক্রির। বেআইনি ভাবে এই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে তা দিয়ে ফের চোরাই সোনা ও মাদক কিনে পাঠানো হচ্ছিল ভারতে।

যাঁরা কলকাতা ছেড়ে ভারতের অভ্যন্তরে অন্য শহরে উড়ে যান, তাঁরা দেহ তল্লাশির শেষে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে পৌঁছন। তার পরে আর তল্লাশি হয় না। সোজা বিমানে উঠে যান যাত্রীরা। একই ভাবে কলকাতা থেকে বিদেশে যাওয়ার যাত্রীরা তল্লাশি শেষ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢোকেন। অভ্যন্তরীণ উড়ান আর আন্তর্জাতিক উড়ানের দুই নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কাচের দরজা আটকানো থাকে একটি চেন ও তালা দিয়ে।

ডিআরআই জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে প্রতি বার দুই ব্যক্তি অভ্যন্তরীণ উড়ানের দু’টি টিকিট কেটে ঢুকে পড়ছিলেন সেখানকার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। তাঁরা জুতোর তলায় লুকিয়ে নিচ্ছিলেন ডলার। অভ্যন্তরীণ উড়ানের যাত্রীদের সঙ্গে বিস্ফোরক রয়েছে কি না, তল্লাশির সময়ে প্রধানত তার উপরেই জোর দেওয়া হয়। ফলে, জুতো খুলে তল্লাশি হয় না।

ওই একই সময়ে এক ব্যক্তি কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢুকে যাচ্ছিলেন। এই তিন জন দেখা করছিলেন দুই নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কাচের দরজার কাছে। তালা দেওয়া থাকলেও ওই দরজার দু’টি পাল্লা দু’দিকে টানলে মাঝে খানিকটা ফাঁক তৈরি হয়। সেখান দিয়েই ব্যাঙ্কক যাওয়া যাত্রীর কাছে পৌঁছে যেত ডলার। তিনি সেই ডলার নিয়ে উঠে যেতেন বিমানে। আর অভ্যন্তরীণ উড়ানের দুই যাত্রী গিয়ে বিমান সংস্থাকে বলতেন, জরুরি কাজ পড়ে যাওয়ায় তাঁরা যাত্রা বাতিল করতে চান।

গত কয়েক মাস ধরে এই প্রক্রিয়ায় কয়েক কোটি টাকার ডলার কলকাতা থেকে প্রধানত ব্যাঙ্ককে পাচার করা হয়েছে বলে ডিআরআই কর্তাদের সন্দেহ। রবিবার কলকাতা থেকে ব্যাঙ্ককের পথে গ্রেফতার করা হয় জিয়াউল মোস্তাফাকে। আর গুয়াহাটি ও ভুবনেশ্বরের পথে গ্রেফতার করা হয়েছে শেখ মাসিরুদ্দিন ও আখতার মঈনিকে। তিন জনই কলকাতার বাসিন্দা। কাচের দরজার ফাঁক বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Smuggling US Dollar KOlkata Airport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE