Advertisement
E-Paper

ভর্তির ‘পেজে’ পর্নোগ্রাফি

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে চলেছে। ছাত্রভর্তির মরসুমও এসে গেল প্রায়। ভর্তির নিয়মকানুন জানার পাতাতেই এখন সবচেয়ে বেশি হাত পড়ে। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অ্যাডমিশন রুলস্ ‘পেজ’টাই বেছে নিল হ্যাকারেরা। অ্যাডমিশন বোতাম ক্লিক করলেই দেখা গেল পর্নোগ্রাফি। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি সেই ছবি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে বলে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৩

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে চলেছে। ছাত্রভর্তির মরসুমও এসে গেল প্রায়। ভর্তির নিয়মকানুন জানার পাতাতেই এখন সবচেয়ে বেশি হাত পড়ে। তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অ্যাডমিশন রুলস্ ‘পেজ’টাই বেছে নিল হ্যাকারেরা। অ্যাডমিশন বোতাম ক্লিক করলেই দেখা গেল পর্নোগ্রাফি।

খবর পেয়েই তড়িঘড়ি সেই ছবি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে বলে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, হ্যাকারেরা ভর্তির মরসুমের মুখে ‘অ্যাডমিশন’ বাটনের সঙ্গেই পর্নোগ্রাফির লিঙ্ক জুড়ল কেন, তা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। ভিতরের কেউ ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এমনটা করেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।

গত সেপ্টেম্বরেও যাদবপুরের ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, বারবার ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার পিছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতি আছে।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটি খুবই দুর্বল। হ্যাকিং আটকাতে যে সফ্‌টওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার দিয়ে ওয়েবসাইট ‘ব্লক’ করে রাখা দরকার, সে ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়ে সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ তথা আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ সব ক্ষেত্রে কিছু সময় অন্তর ওয়েবসাইটের ‘ভাল্নারেবিলিটি টেস্ট’ করানো উচিত। তা না করালে বোঝা সম্ভব নয়, কোন কোন জায়গাগুলি দিয়ে হ্যাকারেরা ঢুকে পড়তে পারে। আগের বার ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার পরেই কলকাতা পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞেরা ওয়েবসাইটের দুর্বল জায়গাগুলি কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন।

মাস ছয়েকের ব্যবধানে ফের ওই ওয়েবসাইট হ্যাক হল কী করে? রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রাথমিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। আরও কাজ হবে। ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব বাইরের সংস্থার হাতে টেন্ডার ডেকে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তো সেই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই।’’ বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট হ্যাক হওয়ার অভিযোগ কেন উঠছে, কোথায় গলদ থেকে গিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিসস্বরূপ বর্মা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ‘অ্যাডমিশন’ বোতামে ক্লিক করলেই একটি পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইট খুলছে বলে অভিযোগ ওঠে সোমবার সকালে। সে ঘটনা জানার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তা সরিয়ে দেওয়া হয়। আশিসবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে দেখতে হবে। কে, কখন, কীসের জন্য এমন করল, তা জানা জরুরি। এটা তো কোনও ভাল ঘটনা নয়। নিশ্চয়ই ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোথাও গলদ থেকে গিয়েছে। তা খুঁজে বার করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’’

গত বছর সেপ্টেম্বরে যখন তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিল ছাত্রছাত্রীদের বড় অংশ, তখনই এক শনিবারে ওয়েবসাইটে দেখা যায়, অভিজিৎবাবু ‘আই অ্যাম সরি’ বলে বার্তা দিয়েছেন। তা হলে কি ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ প্রশমিত করতেই দুঃখপ্রকাশ করলেন উপাচার্য? কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ জানান, উপাচার্য মোটেই ওই বার্তা দেননি। ওয়েবসাইট হ্যাক করে কেউ ওই কাজ করেছে। সে বারও পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইওরোপের একটি দেশ থেকে সে বার হ্যাক করা হয়েছিল। যদিও সে বারের হ্যাকিংয়ের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

Jadavpur university hacker Pradeep Ghosh Register Abhijit Chakraborty police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy