Advertisement
১০ মে ২০২৪
KOLKATA

'৫ মিনিট আলো-এসি সব বন্ধ, ভাগ্যিস তখনও সুড়ঙ্গে ঢুকিনি!'

দেখতে দেখতে কেটে গেল ১০ মিনিট। মাঝ রাস্তায় এভাবে কেন দাঁড়িয়ে ট্রেন, কখনই বা ছাড়বে! প্রশ্নগুলো ঘোরাফেরা করছিল মেট্রোর কামরায়।

সোমবার সকালে বেলগাছিয়া স্টেশনের দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।

সোমবার সকালে বেলগাছিয়া স্টেশনের দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।

ঋত্বিক দাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:০৩
Share: Save:

তখন অফিস টাইমের ব্যস্ততা হুড়োহুড়ি। দমদম থেকে সবে ছেড়েছে কবি সুভাষগামী এসি মেট্রো। হঠাৎ থমকে গেল। পাশের লোকাল ট্রেনের লাইনে এই ছবি মাঝেমাঝেই দেখা যায়। তাই বলে মেট্রোতে!

কেউ কিছু বুঝতে বুঝতেই কেটে গেল কিছু ক্ষণ। সকলেই ভাবছেন এই বোধহয় ছাড়বে। কিন্তু কোথায় কী! তত ক্ষণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে আলো। এমনকি এসি-ও। সহযাত্রীদের কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। আমারও অফিসে লেট হওয়ার চিন্তা।

দেখতে দেখতে কেটে গেল ১০ মিনিট। মাঝ রাস্তায় এভাবে কেন দাঁড়িয়ে ট্রেন, কখনই বা ছাড়বে! প্রশ্নগুলো ঘোরাফেরা করছিল মেট্রোর কামরায়। তবে মেট্রোর পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে কিছু জানানো হল না। আলো নেই, এসি চলছে না, টিমটিম করে জলছে একটা মাত্র ইমার্জেন্সি টিউবলাইট— একটা দমবন্ধ পরিস্থিতি। উল্টো দিকের লাইনে একটা মেট্রো হুস করে বেরিয়ে গেল। কিন্তু এই মেট্রোর রেকটা ঠায় দাঁড়িয়ে।

আরও পড়ুন: ‘মন্ত্রী আসে, মন্ত্রী যায়, শুধু হাবা বদলায় না’

যে যেটুকু বিজ্ঞান জানেন, সকলে নিজের মতো করে যুক্তি সাজিয়ে উত্তর খোঁজার চেষ্টা, কেন দাঁড়িয়ে গেল ট্রেনটা! কিন্তু মেট্রোর তরফে কোনও খবর এল না। পাশ থেকে কেউ এক জন বলে উঠলেন,‘ভাগ্যিস মেট্রোটা সুড়ঙ্গে ঢোকেনি, কী দুর্দশাই হত তা হলে!’ আমার সামনের ছেলেটিকে দেখলাম, মোবাইল দেখছেন আর দরদর করে ঘামছেন।

হঠাৎই আস্তে আস্তে চাকা গড়াতে শুরু করল। কিন্তু ট্রেন ১০ সেন্টিমিটারও এগোয় না, আবার হ্যাঁচকা টানে দাঁড়িয়ে পড়ে। বোঝা যায়, ডাউন লাইনের ঢালে ট্রেন গড়াচ্ছে আর মাঝে মাঝে ব্রেক টানছেন চালক। মিনিট পনেরো পর স্বাভাবিক গতিতে ট্রেনটা চলা শুরু করল। পাতাল প্রবেশের পরেও মেট্রোর আলো জ্বলল না। শুধু চালিয়ে দেওয়া হল একটা ব্লোয়ার। আলো-আঁধারি টানেল দিয়ে ছুটছে মেট্রোর একটা অন্ধকার রেক। শেষমেশ মিনিট পনেরো পর দমদম থেকে বেলগাছিয়া পৌঁছল ট্রেন। কিন্তু বিপত্তি তখনও কাটেনি।

যাত্রীরা উঠলেন বটে, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই এক আরপিএফ জওয়ান এসে কামরা খালি করতে বললেন। বেলগাছিয়া স্টেশন তখন ভিড়ে ঠাসাঠাসি। সামনের কামরা দুটো থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার কিছু পরে, পিছনের কামরায় থাকা যাত্রীদের নিয়ে কবি সুভাষের উদ্দেশে রওনা হল মেট্রোটা। মিনিট কুড়ি কেটে গেলেও কিন্তু যাত্রীদের উদ্দেশে কোনও বার্তাই আসেনি মেট্রোর তরফে। কিছুক্ষণ পর বলা হল দমদম ছেড়ে আসছে পরের মেট্রো।

আরও পড়ুন: চাদর-চাপা শিশুপুত্রের দেহ, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলেন মা

অফিসে এসে সহকর্মী সাংবাদিক সোমনাথ মণ্ডলকে বিষয়টা জানালাম। তিনি মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জানলাম, সবটা শোনার পর মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এখন একটা মিটিং-এ আছি। পরে কথা বলছি।’’ তার পর আর তিনি ফোন ধরেননি। জবাব আসেনি হোয়াটস্‌অ্যাপেরও।

এমনিতে সময়ের মেট্রো অসময়ে আসাটা এখন দস্তুর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে কেন এমনটা হল জানি না। নেহাত একটু ঠান্ডা পড়েছে, তাই বাঁচোয়া। গরম কালে যদি সুড়ঙ্গে ওভাবে পনেরো মিনিট আটকে থাকত মেট্রো! ভাবতেই পারছি না।

ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE