নীতিগত সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। এ বার ‘কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট’ (কেআইটি)-এর ফ্ল্যাট ও দোকান থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযানে নামতে চলেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। তার প্রথম পর্যায়ে অবৈধ দখলদারদের নোটিস পাঠিয়ে কেআইটি-র ফ্ল্যাট বা দোকান ছেড়ে দেওয়ার কথা বলবে পুর দফতর। দফতর সূত্রের খবর, কেআইটি-র ৭৪৩৩টি ফ্ল্যাটের ৪৩ শতাংশ এবং ১৭৯৯টি দোকানঘরের প্রায় ৩২ শতাংশ এখন অবৈধ দখলদারদের হাতে। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারের প্রতি বছর মোটা টাকা বেরিয়ে গেলেও ওই আবাসনগুলি থেকে রোজগার প্রায় নেই বললেই চলে।
আগেকার কেআইটি-কে এখন ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ)-র সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংযুক্তিকরণের পরে কেএমডিএ কেআইটি-র ফ্ল্যাট ও দোকানগুলি নিয়ে সমীক্ষায় নামে। কেএমডিএ-র অফিসারেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফ্ল্যাট ও দোকানের মালিকানা খতিয়ে দেখেন। তার পরে রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ কেএমডিএ-র কর্তাদের! পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘এত দিন পর্যন্ত জানাই ছিল না, কত ফ্ল্যাট বেআইনি দখলদারদের হাতে রয়েছে। সরকার সেই সব ফ্ল্যাট ও দোকান উদ্ধার করবে।’’
কেএমডিএ সূত্রের খবর, কেআইটি-র ৭৪৩৩টি ফ্ল্যাটের মধ্যে মাত্র ১৭৪৬টি ফ্ল্যাট যাঁদের নামে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের বৈধ উত্তরাধিকারীরা ভোগদখল করছেন। ৩১৭৩টি ফ্ল্যাট দখল করে রয়েছেন অবৈধ দখলদারেরা। যাঁদের কাছে কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই। ৩১টি ফ্ল্যাট জবরদখল করে আছেন বিভিন্ন জন। আর ১৪৬টি ফ্ল্যাট তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
প্রায় একই অবস্থা দোকানের ক্ষেত্রেও। কেআইটি-র নথি অনুযায়ী, ১৭৯৯টি দোকানের মধ্যে ৫৩০টি দখল করে আছেন অবৈধ দখলদারেরা। ৪০টি দোকানের ক্ষেত্রে আবার জবরদখলের ঘটনা ঘটেছে। ৩৯টি দোকান তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাকি ৩১টি দোকান এখনও কেআইটি-র দখলে রয়েছে।
কেএমডিএ-র কর্তারা জানাচ্ছেন, পরপর হাতবদল চলতে থাকলেও সরকার তার বিন্দুবিসর্গ জানে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যাঁদের নামে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য কাউকে তা বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের হাতে সরকারি কোনও নথি নেই। ফলে প্রত্যেকেই অবৈধ দখলদার হিসেবে সরকারি খাতায় চিহ্নিত। তাঁদের আপাতত ফ্ল্যাট বা দোকান ছেড়ে যেতে বলা হবে বলে সরকারি কর্তারা জানিয়েছেন।
এক কর্তা জানান, এক সময়ে কেআইটি-র বিভিন্ন প্রকল্পে ভাড়ায় থাকা বাসিন্দাদের ফ্ল্যাট কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সে সময়ে ৬৫৯টি ফ্ল্যাট কিনে নিয়েছিলেন বিভিন্ন আবাসিক। তা থেকে সরকারের ২ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy