আচমকা গলায় প্রচণ্ড জ্বালা। পোকা কামড়াচ্ছে নাকি? কয়েক মুহূর্ত পরে মনে হল, গলায় যেন কেউ ব্লেড চালাচ্ছে। ডান হাতটা আপনা-আপনি মোটরবাইকের অ্যাক্সিলারেটর থেকে গলায় চলে এল। আর তখনই বুঝলাম, গলায় আটকে চেপে বসছে একটা সুতো। ধারালো সুতো। মানে, কড়া মাঞ্জা দেওয়া। ক্রমশ বেশি করে চেপে বসছে। ওটা না ফেলতে পারলে গলা কেটে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু আমি তো পরমা উড়ালপুলে মোটরবাইক ছুটিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ থামতে গেলে তো দ্রুত গতিতে পিছনের গাড়ি এসে মেরে দেবে। কী করব তা হলে?
নিউ টাউনের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। রবিবার কলেজ ছুটি। বিকেলে শিবপুরের বাড়ি থেকে মোটরবাইকে যাচ্ছিলাম নিউ টাউন। ওখানে পেয়িং গেস্ট থাকা এক বন্ধুকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একটা জরুরি বই পৌঁছে দিতে।
বাইক চালানোর সময়ে আমি সতর্ক থাকি। মাথায় তাই ছিল ফুল মাস্ক হেলমেট। পার্ক সার্কাস থেকে চিংড়িঘাটার দিকে যাওয়ার পথে উড়ালপুল তখন প্রায় ফাঁকা। সামনে-পিছনে তেমন গাড়ি ছিল না। ফাঁকা রাস্তায় বেশ নিশ্চিন্ত মনেই এগোচ্ছিলাম। বন্ধুর কাছে পৌঁছনোর তাড়া ছিল না। তাই ফাঁকা উড়ালপুলে সাধারণত যতটা জোরে লোকে মোটরবাইক ছোটায়, তার চেয়ে কম গতিতেই চালাচ্ছিলাম আমি। কত হবে? ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারের আশপাশে। আর সেই কম গতিতে চলাটাই রবিবার আমার প্রাণে বেঁচে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।